জানা গেছে সেই ব্যাক্তির পরিচয়ঃ নাগরিকদের নিন্দা

তরুণীকে ধূমপানে বাধাদানকারী বারেক বললেন…

রাজশাহীর সার্কিটহাউস রোডের ফুটপাতে এক তরুণী প্রকাশ্যে ধূমপান করছিলেন, তাই তার ওপর চড়াও হন এক ব্যক্তি।

জানা গেছে তার নাম শহিদ হোসেন বারেক। তিনি ছাত্রলীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা ছিলেন। পরে তিনি দুইবার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ভোট করে তার ফলাফল ভরাডুবি হয়। এতে দুইবারই তার জামানত হারাতে হয়। বর্তমানে তিনি ঠিকাদারি করেন।

রবিবার বিকেলে এক তরুণীকে উগ্র ভাষায় ভৎর্সনা করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য করেন তিনি। শুধু তাই নয়, ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পোস্ট করা হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ধূমপানরত অবস্থায় তরুণ-তরুণীর ওপর চড়াও হন মধ্যবয়সী শহিদ হোসেন বারেক নামে স্থানীয় এক ঠিকাদার। সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় আরও মানুষ জড়ো হয়। তারাও চড়াও হন ওই যুগলের প্রতি। এক পর্যায়ে তাদের উঠে যেতে বলেন। তরুণী পালটা প্রশ্ন করেন, মেয়ে বলেই কি আমাকে উঠে যেতে বলছেন? মেয়ে বলেই আমাকে বাধা দিচ্ছেন?

তখন বারেক বলেন, হ্যাঁ মেয়ে বলেই বাধা দিচ্ছি। আরেকজন বলেন, এভাবে প্রকাশ্য মেয়ে মানুষ ধূমপান করলে তাদের পাড়ার মেয়েরা নষ্ট হয়ে যাবে। ভদ্রভাবে উঠে যেতে বলছি, আপনারা উঠে যান। তখন তরুণীর সঙ্গে থাকা তরুণ বলেন, সিগারেট ফেলে দেওয়া হয়েছে। এখন তো ধূমপান হচ্ছে না। এখন বসে থাকতে আপত্তি কেন? তখন বারেক বলেন, এক মুহূর্ত এখানে বসা যাবে না। এখনই উঠে যান।

জানতে চাইলে শহিদ হোসেন বারেক বলেন, ‘একজন মেয়ে মানুষ প্রকাশ্যে সিগারেট খাচ্ছিলো। এটা খারাপ দেখা যাচ্ছিলো। পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিলো। পাড়ার মেয়েরা খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই ভালোভাবে নিষেধ করেছি। উঠে যেতে বলেছি।’

পুরুষদের সিগারেট খেতে নিষেধ করেন না কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‌’ছেলে-মেয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে। ছেলেদের নিষেধ করা যায় না। কিন্তু মেয়েরা প্রকাশ্যে সিগারেট খেলে খারাপ লাগে।’

নারী-পুরুষের সমান অধিকারে বিশ্বাস করেন কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে সমান অধিকার। কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে না। আপনার কি মনে হয়, আমি খারাপ কিছু করেছি? একজন সাংবাদিক হয়ে আমাকে এ প্রশ্ন করেন কিভাবে? প্রশ্ন করেই নামাজে যাবেন বলে ফোন কেটে দেন বারেক।

এবিষয়ে নগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা জানতে পুলিশ খোঁজ নিচ্ছে।

নারী হেনস্থার ঘটনায় কী ভাবছে দেশের নাগরিকরা?

ভিডিওটি নিয়ে এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ জনগণ নানাবিধ আলোচনা-সমালোচনা করছেন।

অনেকেই ভাবছেন ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর কাজটি ভালো হয়নি। কেউ কেউ বলছেন ধূমপান করলে প্রশাসন চাইলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে, সাধারণ জনগণ কেন যা ইচ্ছা তাই ব্যবহার করবে।

এদিকে, ঘটনার পর পর নেটিজেনরা মন্তব্য করছেন। ধূমপান করা কোনো অবস্থাতেই ঠিক নয়; কিন্তু এভাবে ধূমপানের জন্য কোনো নারী বা পুরুষকে হেয় করার সুযোগ নেই। আর ভিডিও করা আরও মারাত্মক অপরাধ।

আরো পড়ুনঃ তরুণীকে ধূমপানে বাধা দেয়া নিয়ে যা জানালেন বারেক