তরুণীকে ধূমপানে বাধা দেয়া নিয়ে যা জানালেন বারেক

তরুণীকে ধূমপানে বাধাদানকারী বারেক বললেন…

রাজশাহীর সার্কিটহাউস রোডের ফুটপাতে এক তরুণী প্রকাশ্যে ধূমপান করছিলেন, তাই তার ওপর চড়াও হন শহিদ হোসেন বারেক নামের এক ব্যক্তি।

[ভিডিও দেখুন]

তরুণীকে উগ্র ভাষায় ভৎর্সনা করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য করেন তিনি। শুধু তাই নয়, ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালও করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে রোববার বিকেলে। পরে রাতেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। এতে সচেতন মানুষের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।ভিডিওতে দেখা যায়, রাজশাহী সার্কিট হাউসের পাশের ফুটপাতে বসে তরুণ-তরুণী ধূমপান করছিলেন।

মেয়েটি শাড়ি ও ছেলেটি টিশার্ট-প্যান্ট পরা ছিলেন। তাদের মধ্যে মেয়েটির হাতে জ্বলন্ত সিগারেট ছিল। এ ঘটনা দেখে প্রথমে মধ্যবয়সী শহিদ হোসেন বারেক নামে স্থানীয় এক ঠিকাদার তাদের ওপর চড়াও হন।
এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। বারেক উগ্র ভাষায় মেয়েটিকে ধমকাতে শুরু করেন।

মেয়েটি প্রতিবাদ করে তাকে গলা নামিয়ে কথা বলতে বলেন। তার পরিচয় জানতে চান। কয়েক মিনিটের মধ্যে সেখানে আরও ১৫-২০ জন মানুষ জুটে যায়। সবাই একজোট হয়ে তরুণ-তরুণীকে ওই স্থান ত্যাগ করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এসময় এক ব্যক্তি এসে তরুণীর পক্ষ নিলে তাকেও খারাপ ভাষায় কথা বলা হয়।

মেয়েটি তখন বলেন, সবাই তো এখানে প্রকাশ্যে ধূমপান করছেন। তাদের কেনো নিষেধ করছেন না। মেয়ে বলেই আমাকে বাধা দিচ্ছেন? তখন বারেক বলেন, হ্যাঁ মেয়ে বলেই বাধা দিচ্ছি। আরেকজন বলেন, এভাবে প্রকাশ্য মেয়ে মানুষ ধূমপান করলে তাদের পাড়ার মেয়েরা নষ্ট হয়ে যাবে।

ভদ্রভাবে উঠে যেতে বলছি, আপনারা উঠে যান। তখন তরুণীর সঙ্গে থাকা তরুণ বলেন, সিগারেট ফেলে দেওয়া হয়েছে। এখন তো ধূমপান হচ্ছে না। এখন বসে থাকতে আপত্তি কেনো? তখন বারেক বলেন, এক মুহূর্ত এখানে বসা যাবে না। এখনই উঠে যান।

এক পর্যায়ে তরুণ-তরুণী উঠে যেতে বাধ্য হন। যাওয়ার সময় তরুণী পেছন ফিরে তাকান। তা দেখে আক্রমণকারী আরেকজন লোক চেঁচিয়ে বলেন, আবার ট্যারা চোখে তাকাচ্ছে।’

জানা গেছে, শহিদ হোসেন বারেক ছাত্রলীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা ছিলেন। পরে তিনি দুইবার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ভোট করে তার ফলাফল ভরাডুবি হয়। এতে দুইবারই তার জামানত হারাতে হয়। বর্তমানে তিনি ঠিকাদারি করেন।

জানতে চাইলে শহিদ হোসেন বারেক বলেন, ‘একজন মেয়ে মানুষ প্রকাশ্যে সিগারেট খাচ্ছিলো। এটা খারাপ দেখা যাচ্ছিলো। পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিলো। পাড়ার মেয়েরা খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই ভালোভাবে নিষেধ করেছি। উঠে যেতে বলেছি।’

পুরুষদের সিগারেট খেতে নিষেধ করেন না কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‌’ছেলে-মেয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে। ছেলেদের নিষেধ করা যায় না। কিন্তু মেয়েরা প্রকাশ্যে সিগারেট খেলে খারাপ লাগে।’

নারী-পুরুষের সমান অধিকারে বিশ্বাস করেন কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে সমান অধিকার। কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে না। আপনার কি মনে হয়, আমি খারাপ কিছু করেছি? একজন সাংবাদিক হয়ে আমাকে এ প্রশ্ন করেন কিভাবে? প্রশ্ন করেই নামাজে যাবেন বলে ফোন কেটে দেন বারেক।

নামাজের পর অসংখ্যবার ফোন করলেও বারেক আর ফোন ধরেননি। এবিষয়ে নগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা জানতে পুলিশ খোঁজ নিচ্ছে।

আরো পড়ুনঃ পাবলিক প্লেসে সিগারেট খাওয়ার জন্য ধর্ষণ হয়?