বরগুনায় শিক্ষকের নির্যাতনে কুঁজো হেফজো শিক্ষার্থী

বরগুনার আমতলী পৌর শহরের মহিলা কলেজ সড়কের কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মো. আবু বকরের নির্মম নির্যাতনে নুর জামাল নামের এক ছাত্রের মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। বর্তমানে ওই ছাত্র আর উঠে দাঁড়াতে পারে না। কুজো হয়ে চলাফেরা করছে।

এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ওই শিক্ষক আব্দুল্লাহ, গোলাম রাব্বি ও নোমান নামের তিন ছাত্রকে মারধর করেছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার ছাত্ররা ফুঁসে উঠেছে। তারা ওই শিক্ষকের বিচার দাবি করে মঙ্গলবার মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আমতলী পৌর শহরের মহিলা কলেজ সড়কে আমতলী কওমি মাদ্রাসার হেফজো বিভাগে শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। তিন মাস আগে মাদ্রাসায় পাঠদান শুরু হয়।

পাঠদানের শুরু থেকেই শিক্ষক হাফেজ মো. আবু বকর সিদ্দিক শিক্ষার্থীদের অহেতুক নির্যাতন করে আসছেন। গত ১০ নভেম্বর রাতে নুর জামাল নামে নাজেরা বিভাগের এক ছাত্রকে অহেতুক মারধর করেন। তার মারধরে ওই ছাত্রের মেরুদণ্ড ভেঙে যায়।

১৪ দিন ধরে পরিবারের অগোচরে ওই শিক্ষার্থীর চিকিৎসা চলছে। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী হাঁটাচলা করতে পারে না। কুঁজো হয়ে হাঁটতে হচ্ছে। ছাত্র নুর জামালকে বেল্ট পরিধান করে থাকতে হচ্ছে।

এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ওই শিক্ষক মঙ্গলবার সকালে আব্দুল্লাহ, গোলাম রাব্বি ও নোমান নামের তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা শিক্ষক হাফেজ আবু বকরের বিচার দাবিত মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেছে। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।

শিক্ষকের নির্মম নির্যাতনের শিকার নুর জামালের ভাষ্য, অহেতুক হুজুর আমাকে মেরেছেন। এতে আমার মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে।

আমি বড় হুজুরের কারণে এ বিষয়টি বাবাকে জানাতে পারিনি। বড় হুজুর আমাকে ডাক্তার দেখিয়েছেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মো. আবু বকর মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, দুষ্টুমি করেছে তাই একটু শাসন করেছি।

আমতলী কওমি মাদ্রাসার মোহতামিম (প্রধান শিক্ষক) মুফতি মাওলানা ওমর ফারুক জেহাদী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ওই ছাত্রকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হাফেজ আবু বকরকে এ বিষয়ে সংশোধন হতে তাগিদ দেয়া হয়েছে।

আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ছবি ও তথ্যঃ যুগান্তর/ বরগুনা প্রতিনিধি

সাম্প্রতিক সময়ে আবাসিক মাদ্রাসাগুলোতে শিশুদের উপর শারিরীক ও যৌন নির্যাতনের অসংখ্য খবর পাওয়া যাচ্ছে। শিশুর সুস্থ মানসিক বিকাশে এগুলো বন্ধ করা অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ।

এই লিংকে এরকম অনেকগুলো খবর পাওয়া যাবে।