ফার্স্ট টাইমেই মেডিকেলে ফার্স্ট

Rizvi Touhid Shuvo.

স্কুল কলেজে কোন ক্লাসেই ফার্স্ট হতে পারিনি। তাই স্বভাবতই ফার্স্ট হবার স্বপ্ন নিয়ে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দেইনি। কিন্তু বুকের ভেতর একটা আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিলো ডিএমসিতে চান্স পেয়ে বাবার ইচ্ছেটাকে পূর্ণ করবার।

আমি ফার্স্ট টাইমার ছিলাম। সেই কলেজে পড়ার সময় থেকে মা প্রায়ই বলতেন, ” বাবা, এমন যদি হয় তুই মেডিকেলে ফার্স্ট হয়ে গেলি, তবে কেমন হবে? ”

মায়ের সরল মনের ভাবনা দেখে আমার প্রচন্ড হাসি পেত। মা এমনটা বলতেন কারণ পুরোটা সময় ধরে উনিই আমাকে সবচেয়ে কাছ থেকে দেখেছেন। অনেক রাত জাগা গল্পের সাক্ষীও তিনি।

রেজাল্ট দেয়ার আগের দিনও যখন আমি প্রচন্ড চিন্তিত সেই দূর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে উনি বলে ফেললেন, ” দেখিস, তুই ফার্স্ট হবি । ” আমার যাপিত জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি কিছু একটা বলে ফেললে তা কখনো সত্য হয় না।

কিন্তু মায়ের এ কথা কি করে যে ফলে গেলো তা সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন। সেদিনই প্রথম আমি মায়ের চোখ দিয়ে ছলছলিয়ে অশ্রু ঝরতে দেখেছি। বাবা জড়িয়ে ধরে শুধু দুটি শব্দই বলেছিলেন, ” সাবাশ বেটা।”

আমার ছোট বেলা কেটেছে প্রচন্ড দুরন্তপনায়। ময়মনসিংহ শহরে। সারাজীবন ধরে বাবা মার কাছ থেকে পেয়েছি অবাধ স্বাধীনতা। কোনদিন কখনো বলেননি তুই বৃষ্টিতে ভিজতে পারবি না, কাদার ফুটবল খেলবি না, সারাদিন পুকুরে সাঁতরাবি না।

ভালবাসা বলতে আমার জীবনে দুটি জিনিসই ছিলো। খেলাধুলা আর বই পড়া। কবিতা পড়তে খুব ভালবাসি। স্কুলে থাকতে জাতীয় পর্যায়ে বাস্কেটবলে হয়েছিলাম রানার্স আপ। আন্তঃকলেজ হ্যান্ডবল জাতীয় পর্যায়ে খেলা চলার সময় কলেজে টেস্ট পরীক্ষা চলছিলো ।

শিক্ষক এবং বাবা-মা দুপক্ষেরই সম্মতিতে ঢাকায় খেলতে আসলাম। চারটা পরীক্ষা বাদ গেলেও সেবার রানার্স আপ হয়েছিলাম।

এ কয়দিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং আমার ব্যাচ কে-৭৪ কে প্রচণ্ড ভালবেসে ফেলেছি যেমনটা ভালবাসি দেশ ও মা কে। চারপাশে পেয়েছি অনবদ্য বন্ধুদের আর মাথার উপর ছাতার ন্যায় সিনিয়রদের।

এসব ব্যাপার গুলোর কারণেই নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হয়। ডিএমসি আসার পর অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা মেডিসিন ক্লাবের প্রোগ্রামে একটি নাটক করা।স্বপ্ন দেখি আমাদের সবাই একদিন আদর্শবান ডাক্তার হয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবো।

Rizvi Touhid Shuvo.
DMC K-74
First Place in Medical Admission Test 2016-17
© Humans of DMC