খাতা মূল্যায়নে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ সত্য নয়ঃ রাবি আইআর সভাপতি

রাবি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ru rajshahi university

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগে শিক্ষার্থীদের মাস্টার্সের ফলাফল বিপর্যয়ের অভিযোগ সত্য নয় দাবি করেছেন বিভাগটির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী।

তিনি বলছেন, সঠিক নিয়ম মেনেই পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করা হয়েছে, যেখানে কোনো ত্রুটি হয়নি। যদিও শিক্ষার্থীদের দাবি সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা ও খাতা মূল্যায়নে পক্ষপাতিত্বের কারণে ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে।

রাবি IR বিভাগে নজিরবিহীন ফল বিপর্যয়

এর আগে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৯ সালের মাস্টার্সের (থিসিস গ্রুপ) ফলাফল প্রকাশিত হয় গত ১১ নভেম্বর।

এরপর গত ৯ ডিসেম্বর কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের প্রাপ্ত ফলাফলে অসন্তোষ জানিয়ে পরীক্ষার খাতা পুর্নমূল্যায়নের দাবিতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন করেন।

আবেদনের পত্রের অনুলিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ছাত্র উপদেষ্টা, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও কলা অনুষদের ডিনের দফতরে জমা দেয় তারা।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ২০১৮-এর বিএসএস সম্মান চূড়ান্ত পরীক্ষায় বিভাগের ২৯ জনের মধ্যে ১১ জন ৩.৫০-এর বেশি সিজিপিএ অর্জন করেন।

তবে গত ১১ নভেম্বর প্রকাশিত ফলাফলে সভাপতির ঘনিষ্ঠ ও তার তথাকথিত ‘সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন’-এর তিনজন শিক্ষার্থী ৩.৫০ সিজিপিএ বা তার বেশি অর্জন করতে সমর্থ হয়।

এমনকি যে এমএসএস-২০১৯ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে তার বিএসএস সিজিপিএ ৩.৩০ (২১তম) ছিল। অভিযোগের বিষয়ে গত ২২ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, ড. সৈয়দ মো. আব্দুল্লাহ্ আল মামুন চৌধুরী সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পর স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, ছাত্র-ছাত্রীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, পক্ষপাতিত্ব এবং ক্লাস ও পরীক্ষার ক্ষেত্রে দায়িত্বে অবহেলা, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম লঙ্ঘন ও অনৈতিক কার্যকলাপের ফলে আমাদের এমএসএস-২০১৯ পরীক্ষার ফলাফলে বিপর্যয় ঘটেছে।

শিক্ষিকাকে পদোন্নতিতে রাবি ভিসির তোড়জোড়, আইইআর পরিচালকের পদত্যাগ!

তবে অভিযোগের ভিত্তিহীন দাবি করে অধ্যাপক চৌধুরী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৯ সালের মাস্টার্স (থিসিস) গ্রুপের ১০০ নম্বরের ছয়টি কোর্স ও ৩০০ নম্বরের থিসিস রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি কোর্সের উত্তরপত্র ও থিসিস দু’জন করে পরীক্ষক মূল্যায়ন করেছেন।

ফলাফল বিপর্যয়ের অভিযোগে অভিযুক্ত করা যুক্তিসঙ্গত নয় কেননা তিনি মাত্র তিনজন পরীক্ষকের জন্য নির্ধারিত উত্তরপত্রগুলো মূল্যায়ন করেছেন যেগুলোর প্রতিটি আবার দ্বিতীয় পরীক্ষক দ্বারা মূল্যায়িত হয়েছে।

বাকি নয় জন পরীক্ষকের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেছেন অন্য ছয়জন। দুটি করে তিনজন এবং একটি করে তিনজন।

যে সকল উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষক দ্বারা মূল্যায়নযোগ্য ছিল সেগুলো বিধি মোতাবেক পরীক্ষক প্যানেলের তালিকা থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা মূল্যায়ন করা হয়েছে।’

‘এছাড়া থিসিস পরিচালনার জন্য বিভাগে অভিজ্ঞ শিক্ষক না থাকায় তাকেই সময় দিতে হয়েছে কিন্তু এইসব থিসিসের তিনি পরীক্ষক ছিলেন না।

এই থিসিসগুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ অধ্যাপকগণ মূল্যায়ন করেছেন।

এরা বিধি মোতাবেক পরীক্ষক প্যানেলের অন্তর্ভুক্ত। অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ক্ষেত্রে যে অভিযোগ করা হয়েছে তাতে বিভাগের সভাপতির কোনো দায়-দায়িত্ব নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী সংশ্লিষ্ট কোর্স শিক্ষক অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের নম্বর সীলগালা করে জমা দিয়ে থাকেন।

বিভাগের সকল কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুসরণ করেই করা হয়েছে। বিভাগের কোনো শিক্ষকেরই কারো প্রতি বিশেষ অনুরাগ বা বিরাগ ছিল না। শিক্ষার্থীরা যে ফলাফল পেয়েছে এটিই তাদের অর্জন।

আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি কোনো শিক্ষকই তাদের কারো প্রতি কোনো পক্ষপাতিত্ব করেননি।’

সালমান শাকিল/এআরএ/এমকেএইচ