মেসে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়লো ইবি ছাত্র-ছাত্রী

প্রেমিকার মেসে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়লো ইবি ছাত্র

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র প্রেমিকার জন্মদিন পালন করতে গিয়ে ছাত্রী মেসে আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয় লোকজনের কাছে ধরা পড়েছেন।

শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ত্বকী প্যালেসের পাশে এক ছাত্রী মেসে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ছাত্র ও ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও ভুগোল বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে, রাতে মেয়েটির জন্মদিন পালন করতে ওই ছেলে ছাত্রী মেসে প্রবেশ করেন। ভবনের তৃতীয় তলায় জন্মদিনের কেক কাটেন তারা। এসময় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা মেসে প্রবেশ করেন।

স্থানীয়রা সেখানে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান। পরে ছাত্রটি কৌশলে বের হয়ে মেসের ছাদ থেকে ত্বকী প্যালেসের ছাদে লাফ দেন। এসময় স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় ছাত্রকে ছাদ থেকে নামানো হয়।

পরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতা বিপুল হোসেন খান ও হোসাইন মজুমদার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। ওই ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকতাও অবস্থান করতেন। পরে ওই কর্মকর্তা, বাড়িওয়ালা মোজাম্মেল, ছাত্রলীগ নেতারা ওই ছাত্রকে উদ্ধার করেন।

স্থানীয়রা আরো জানান, বেশ কিছুদিন ধরে মেসগুলোতে এ ধরনের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন তারা। তবে হাতেনাতে কাউকে সেভাবে ধরতে পারেননি। অনেক মেসে মালিক অবস্থান না করায় মেয়েরা ইচ্ছেমতো বাইরে যাওয়া-আসা করেন।

মেসগুলোতে নির্দিষ্ট কোনো নিয়মনীতি না থাকায় তারা অবাধে মেলামেশার সুযোগ পাচ্ছে। প্রায়ই ছেলেদেরকে মেয়েদের মেসের সামনে রাত ১১টা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এতে করে মেয়েদের যেমন ক্ষতি হতে পারে তেমনি আমাদের এলাকার বদনাম হচ্ছে।

এলাকাবাসীর দাবি, এলাকার মেসগুলোতে এ ধরনের অশ্লীল কর্মকান্ড না ঘটুক। প্রতিটি মেসে প্রবেশের নির্দিষ্ট নিয়ম থাকা দরকার। এ নিয়ে শনিবার বাসা মালিক ও স্থানীয় লোকজন মিটিংয়ে বসবে বলে জানিয়েছে এলাকার লোকজন।

পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিষয়টি অবহিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসিক হলগুলোতে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত প্রবেশের নিয়ম থাকলেও অনেক ছাত্রী রাতের বেলা হলের বাইরে ঘোরাফেরা করেন বলে জানা গেছে।

রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত হলের বাইরে ঘোরাফেরা করে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ থেকে আসা বাসে থাকা অন্য ছাত্রীদের সাথে তারা হলে প্রবেশ করে। কিন্তু মেস গুলোতে প্রবেশের ক্ষেত্রে তেমন কোনো নিয়ম নেই।

প্রান্তিক এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানের কারণে এ সময়টাতে এসব ছাত্রীদের সাথে যেকোনো অঘটন ঘটতে পারে বলে আশংকা করছেন বিভিন্ন শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে প্রশাসনের আরো সতর্ক হওয়া উচিত বলে মনে করছেন তারা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি সকালেই বিষয়টি জেনেছি। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একজন ছাত্র এভাবে রাত্রে বেলা মেয়েদের মেসে যাওয়াটা খুবই আপত্তিকর। এর দায়ভার তাকেই নিতে হবে।

আমরা মেস মালিকদের সাথে কথা বলবো যেনো মেসগুলোতে কঠোর নীতিমালা অবলম্বন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে সন্ধ্যার পর থেকে প্রক্টরিয়াল বডির তদারকি আরো বৃদ্ধি করবো যাতে সন্ধ্যার পর কোনো ছাত্রী হলের বাইরে না অবস্থান করতে পারে।