ছবিটির দিকে কতক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারবেন?

একটা সিনেমার ট্রেইলার শুরু করা হয় শুধুমাত্র ছাদের একটা ছবি দিয়ে। শুধুমাত্র সাদা একটা ছাদ। আর কিছু না।

এক মিনিট যায়, দুই মিনিট যায়, তিন মিনিট যায়। কিন্তু স্ক্রিনে কোন পরিবর্তন আসে না। সেই সাদা ছাদ এর ছবি। কোন নড়াচড়া নাই, রঙের পরিবর্তন নাই।

এভাবে ৬ মিনিট পার হয়ে যাওয়ার পর দর্শকদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়ে গেল। কেউ অভিযোগ করলো, এই মুভি তাদের “মূল্যবান” সময় নষ্ট করছে। কেউ কেউ এতো কিছু না বলে স্রেফ উঠে চলে গেল। একটা সাদা ছাদের স্থিরচিত্র কতক্ষণ আর সহ্য করা যায়?

এরপর হঠাৎ করেই, ক্যামেরাটি ধীরে ধীরে ছাদ থেকে নিচে নামা শুরু করলো। এবং দেখা গেল, ছোট্ট একটা অসুস্থ বাচ্চা বিছানায় শুয়ে আছে। চোখ সেই ছাদের দিকে। স্পাইনাল কর্ডের সমস্যায় ভোগা বাচ্চাটা ঠাঁই তাকিয়ে ছিলো ঐ সাদা ছাদের দিকে।

এরপর ক্যামেরা আবারও উপরে উঠে গেল, আবারও পর্দায় ভেসে উঠলো সেই সাদা ছাদের দৃশ্য।

সিনেমাটি শেষ করার ঠিক আগে আগে দর্শকদের উদ্দেশ্য করে বলা হলো, আমরা মাত্র ৮ মিনিট এই দৃশ্যটা ধৈর্য্য ধরে দেখতে পারি নাই, কেউ অভিযোগ করেছি, কেউ আবার উঠে চলে গেছি। অথচ এই বাচ্চাটাকে তার সারাটা দিন, দৈনিক ২৪ ঘন্টাই এই দৃশ্য দেখেই কাটাতে হয়। অসুস্থতার কারণে সে ঘাড় পর্যন্ত নাড়াতে পারে না, হাঁটা চলা তো দূরের কথা।

যে জীবন আপনি মাত্র ৬ মিনিটের জন্যও যাপন করতে রাজি নন, সেই জীবন একটা শিশুকে যাপন করতে হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে।

কাজেই, আল্লাহর কাছে নিজেকে নিয়ে অভিযোগ করার আগে আমাদের উচিত অন্যদের দিকেও একটু তাকানো। খোদার যে করুণা, যে দয়া আর যে রহমতগুলো আমরা নিশ্চিত হিসেবে ধরে নিই, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভুলে যাই, সেসব দয়া, বা নিয়ামত না থাকলে আমাদের জীবন কেমন ভয়ঙ্কর হতে পারতো, সেটা নিয়েও কি আমাদের একটু চিন্তা করা উচিত না?

(ছবি এবং লেখাটা Dr. Muhammad Salah এর পেইজ থেকে নেওয়া। আমি শুধু অনুবাদ করেছি মাত্র)