রম্যগল্পঃসাUST এর সিNডিকেট!

সাইন্টিফিক University of Science & Technology , সাUST নামের মত দেশের ফাস্ট পাবলিক ভার্সিটি ।

ভিটামিন-সি (VC)র নেতৃত্বে সিন্ডিকেটের মিটিং চলছে । ‘দৈনিক আজগুবি আলো’ প্রত্রিকার প্রকাশিত একটি খবর আজ তাদের এই জরুরি সভা’র কারণ । খবরটি প্রচারিত হবার পর ভিটামিন-সি নিজে পটলগুঁফো কে ফোন করে সংবাদটির সত্যতা যচাইয়ের নির্দেশ দেন এবং তড়িঘড়ি করে সিন্ডিকেটের এই জরুরি সভা ডাকেন ; বিষয়টি সুপার-C র নজরে পড়ার আগেই ।

অবশ্য তার কোন সম্ভাবনাই নেই, ভাইটামিন-সি’র এমনিতেই কত কাজ !দেশের এমন ছোটখাট বিষয়ে তার সময় কই?

”আমরা যাচাই বাছাই করে নিশ্চিত হয়েছি স্যার, সংবাদটি সম্পূর্ণ সঠিক ও নির্ভূল ”লেবুমূখো’র টক মার্কা কথা ।

পেপের মত পেটওয়ালা লোকটা বলে উঠলো ” আমাদের ভার্সিটির মান-সম্মান সব গ্রাউন্ডের ধূলায় মিশে গেল স্যার । ”

আঁড়চোখে তাকিয়ে কুমড়াচোখো বলে উঠলো “প্রত্রিকাটির নামের সাথে খবরগুলো ও কেমন যেন আজগুবি টাইপের । সাUST নিয়ে খবরটি তো আরো আজগুবি ! খবরটিতে বলা হয়েছে :

সাইন্টিফিক University of Science & Technology , সাUST কে কেন আমার কাছে লিখিতভাবে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ ঃ-

#আমি সাUST এ 2012 সালে যথাযত ভাবে ভর্তি হয়ে সর্বোচ্চভাবে কল্যাণ কামনায় সচেষ্ট থেকেছি

#সাধারণ ছাত্র হিসেবে সাUST এর সাধারণ সুযোগ-সুবিধাগুলো ও সাধারণের মত করে সাধারণত পায়নি

#সাUST কর্তৃপক্ষের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি সেকেন্ড মেজর কোর্সের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করি এবং আল্লাহর রহমতে EEE তে সুযোগ পাই ।( EEE তে সেকেন্ড মেজর কোর্সের আমি দ্বিতীয় ছাত্র এবং 2012-13 সেশনের আমি একমাত্র ছাত্র )

#শুধু বলার জন্য বলছি , একই দিনে দুই ডিপার্টমেন্ট সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন দুইটি লিখিত পরীক্ষাও দিতে হয়েছে

#সাUST এর প্রিয় ক্যাম্পাসেই ছাত্র জীবনের সবচেয়ে নেক্কারজনক ঘটনার ক্ষত সইতে হয়েছে(বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের তকমা খোদিত হয়েছে )।

#কখনোই বহিরাগতদের ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়নি

#সাUST এ যাতায়াতের সুবাদে ভয়ংকর রোড অ্যাক্সিডেন্টের মুখোমুখি হতে হয়েছে

#সকল নিয়ম পূর্ণ করে ১৮ই মার্চ ২০১৯ ইং তারিখে সেকেন্ড মেজরের সার্টিফিকেট পাওয়ার অফিসিয়াল তারিখ হলেও , ঐ দিন সহ আরো চার-পাঁচবার কর্তৃপক্ষের দেওয়া তারিখ অনুযায়ী অফিসে যাওয়ার পরে এখনো (আগষ্ট ২০২০ )সার্টিফিকেট পাইনি

#রাস্তাঘাটে গাড অফ অনার, বেহায়াপনা নিত্য নৈমেত্তিক ব্যাপার হয়ে গিয়েছে ।

আলুথালু লোকটা একটু নড়েচড়ে বসলো । VC বললো : বেল , কিছু বলছো না কেন ? আজগুবি প্রত্রিকার আজগুবি খবরে আজ আমাদের আজগুবি অবস্থা ।তবে আশার বিষয় হলো স্যার , সুপার-সি র কাছে এসব খবর পৌছানোর কোন চান্সই নেই ; বেলের সহজ সরল উত্তর । তাছাড়া আজগুবি প্রত্রিকার খবরগুলোও আজগুবি । যেমন শিরোনামগুলো দেখুন :

#টাকার খেলা পয়সার মেলা
#প্রফেসারের উত্তোলন
#সময় কাটেনা ভার্সিটিতে
#একটি ফ্রিজের আত্নকাহিনী
#লকডাউনের আগেও কেন ছিল একাকীকত্বের ঈদ
#বডার গার্ড of অনার
#অনুরাগ R মীর হাজি র বাগ
#জগন্নাথে আবার গুন্না
#গাবলীগে দাগ
#জাফরান সাবরান
#ডাক্তারের অপারেশন
#সাইন্টিস্ট কমান্ডার কূটনৈতিক নাকি লাইন ফলোয়ার ব্যালেন্সিং রোবট হাল্ক : এক দ্বীন ইসলাম ভাইয়ের কান্ড !
#খেলাপী কেন বেপারী

“ জগন্নাথে আবার গুন্না ” শিরোনামে বলা হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আবেগ আকাংক্ষা সেই ’১২ সালের আগে থেকেই——যদিও কখনো পড়ার সুযোগ হয়নি তবুও সবসময়ই বলতে ইচ্ছা করে আমার বিশ্ববিদ্যালয় ।
এ থেকেই বুঝা যায় আজগুবি মাল ।
কিছু হতো না তবে কিছু হতো না ……
কোন বেক্কলের কাছ থেকে আবারো বেজে উঠলো : কিছু হতো না তবে কিছু হতো না ……
সবার কর্কশ দৃষ্টি অগ্রায্য করে VC ফোন বের করে বললো : এই চুপ , চুপ ; ভাইটামীন কল দিছে !

: আস্সালামু আলাইকুম স্যার……

: সাইন্টিস্টের গোষ্ঠী , তোগো সাUST রে নিয়া আজগুবি একটা খবর দেশব্যাপী প্রচার হইছে, দেখছোছ?

: জি স্যার , ইয়েস স্যার , এই জন্যই তো আমরা এখন জরুরি মিটিং এ বসছি ….

: তোগো মিটিং রে আমি থু* মারি !

: জি স্যার , ইয়েস স্যার ; আমরা বুঝাইতেছি পরের জন আরো বেশী করবে , সাথে এ ও বুঝাইতাছি আমরা সব কন্টোলে মারা দিছি । পুরাই কন্টোলে !!

: তোরা এহনো মিটিং করতাছোছ , দেশ-বিদেশে ইজ্জত পাংচার হইতাছে ; নাতনীর বিয়া হইতাছে না…..

: ইয়েস স্যার , ইয়েস স্যার , আমরা হোম ডেলিভারি’র ব্যাবস্থা নিছি , এখন থেকে আর ছাত্রদের সার্টিফিকেট তোলার জন্য ক্যাম্পাসে আসতে হবে না , রেজাল্ট পাবলিশ থেকে সবকিছু ফুল অটোমেটিক , জটিলতা-সেশনজট থাকবে না স্যার

: যদি কোন উল্টাপাল্টা হয় তাইলে , বুঝসইতো —-

: জি স্যার , ইয়েস স্যার

: টুট টুট টুট

: হ্যা স্যার , ok স্যার , আল্লাহ হাফেজ স্যার ।

“ রব্বানা লা তুযিগ ক্বুলুবানা বা’আদা ইয হাদাইতানা ওহাবলানা মিল্লাদুনকা রহমাহ ইন্নাকা আনতাল ওহ্হাব ” সূরা আল-ইমরান : ০৮ ।

 

লিখাঃমাহামুদুর রহমান