ও এস ডি হলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন

জনাব মাহবুব কবির মিলনকে হয়ত আপনারা অনেকেই চিনেন। অনেকে চেনেন না। একজন সরকারি চাকুরিজীবী।

খাদ্য অধিদপ্তরে কাজ করেছেন অনেকদিন। বরাবরই তিনি সৎ ও নিষ্ঠাবান হিসেবে অনড় আছেন নিজের জায়গায়।

খাদ্য অধিদপ্তরের নানাবিধ দূর্নীতি, অনিয়ম, ভেজালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।

ঢাকার নামিদামি রেস্তোরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বহু ব্র্যান্ডকে তলব পাঠিয়েছেন পণ্যের গুণগত মানের নামে প্রহসনের কারণ চেয়ে। সবাধান করেছেন।

ফলস্বরূপ, অল্প কিছুদিন বাদেই উনাকে বদলি করা হয় বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে।

নষ্ট দেশে ভালো কাজের পুরস্কার তো এটাই। রেলে এসেও উনার কর্তব্যনিষ্ঠা থেমে থাকেনি। দূর্নীতি বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।

কাঠামাগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিলেন। দেশের মানুষকে বলেছিলেন, কয়েকটা মাস সময় দিন। রেলে বিপ্লব আনব।

দেশের সবচেয়ে লস প্রজেক্ট রেলে প্রাণ ফেরাতে উনার তৎপর মহাযজ্ঞে সত্যিই আশায় বুক বেঁধেছিল মানুষ।

কিছুদিন বাদে রেলের নিয়োগ পরীক্ষা। অসংখ্য প্রার্থী টাকার বস্তা নিয়ে বসে আছে পদের জন্য। আমলা, দালালের দল যেন সামনে ইদের আমেজ পাচ্ছে।

এমন অবস্থায় মাহবুব কবির মিলন সরাসরি ঘোষণা দিলেন, রেলের এবারের পরীক্ষা হবে স্বচ্ছ্ব। কোনরূপ ধরণা, সুপারিশ গ্রহণযোগ্য হবে না।

বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরপেক্ষ একদল কর্মী পাবে, যারা আক্ষরিক অর্থে দেশের সেবা করবে। তাই যারা যোগ্য, তারাই ঠাঁই পাবে নিজ গুণে।

ব্যস! আর যায় কোথায়? একদিনের মাথায় বদলি! এখন তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের ওএসডি পদে নতুন নিয়োগ পেয়েছেন।

আজকে ওনার ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি।

কয়েকদিন আগে বিকাশের মাল্টিপল লগইন সিস্টেমটা বন্ধ করিয়েছেন। যাতে মানুষের হয়রানি অনেকাংশে কমবে।

চেয়েছেন একটা দল গঠন করতে, যারা বড় বড় সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানে একত্রে কাজ করবে। তা আর হলো কই!

মাহবুব কবির মিলন স্যার, আপনি ভুল দেশে জন্মেছেন। জানি, নতুন কর্মক্ষেত্রেও অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবেন আপনার অভিযান।

গল্প, উপন্যাস, সিনেমায় পড়েছি, দেখেছি ভালো কাজে সঙ্গী না পেলেও একলা লড়াই চালিয়ে যাবার কথা। সাফল্য নাকি একদিন ঠিকই ধরা দেবে।

কিন্তু, বাস্তবতা তো কষে এক থাপ্পড় দিয়ে বুঝিয়ে দিল, এসব ফিকশনেই মানানসই।

সত্য, ন্যায়ের পায়ের নিচে আসলে কোন মাটিই নেই। এদেশে আর নতুন ভোর আসবে না।

সাত দিন চোরের, একদিন গেরস্তের এটা বরাবরই শুনি। অথচ, এখানে প্রতিটি দিনই চোরেদের। আওয়াজ তুলতে মানা!

© Jahirul Quayum Feroz