মামুনুল হককে চট্টগ্রামে প্রতিহতের ঘোষণা ছাত্রলীগের

মামুনুল হক mamunul haque

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতাকারী হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে চট্টগ্রামে ঢুকতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা করা হয়। ‘জঙ্গিবাদবিরোধী ছাত্র ও যুব ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে নগর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এই সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগে সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্থপতি।

তার হাত ধরেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। অথচ এখন কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী উনাকে নিয়ে কটূক্তি করছেন। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে বাধা দিচ্ছেন। স্বাধীনতাবিরোধী ধর্ম ব্যবসায়ী মামুনুল হক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছে তা দেশদ্রোহের শামিল।

শুধু চট্টগ্রামে নয় বাংলাদেশের কোথাও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে কটূক্তিকারী মামুনুল হককে সভা করতে দেওয়া হবে না।

চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম বলেন, কুলাঙ্গার মামুনুল হককে চট্টগ্রামের মাটিতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। আমরা ছাত্রলীগের কর্মীরা মামুনুলকে প্রতিরোধে প্রস্তুত আছি।

এই চট্টগ্রামে যেন তাকে আনা না হয়। চট্টগ্রামে মামুনুল এলে যে ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হবে, তার জন্য তাকে যারা চট্টগ্রামে আনবেন তারাই দায়ী থাকবেন।

নগর ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, সাংবাদিক নেতা মাসুদুল হক, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহউদ্দিন, ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন শাহ, আবুল হোসেন আবু, প্রমুখ।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম বলেন, মামুনুল হক স্বাধীনতাবিরোধী ধর্ম ব্যবসায়ী। তিনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা দেশদ্রোহিতার সামিল। এরপর তার নাগরিকত্ব থাকতে পারে না।

মামুনুলকে আমরা চট্টগ্রামে ঢুকতে দেবো না। তাকে অবশ্যই প্রতিহত করা হবে। তাকে প্রতিহত না করে আমরা ঘরে ফিরব না।

তিনি বলেন, ভুলে যাবেন না- সরকার চাইলে শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতের কেউ নিরাপদে ফিরে আসতে পারত না। জামায়াত-বিএনপি, কাসেমী-মামুনুল হক সব একই জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী।

এই চট্টগ্রাম মাস্টারদা, প্রীতিলতা, মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, জহুর আহম্মদ চৌধুরী, এম এ মান্নান, এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর চট্টগ্রাম। এখানে জঙ্গিবাদীর ঠাঁই হবে না।

সভা সঞ্চালনা করনে নগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর।
সভাপতির বক্তব্যে ইমরান আহমেদ ইমু বলেন, মামুনুল হক স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছে আমরা তার নিন্দা জানাই।

তার সমাবেশ চট্টগ্রামের মাটিতে হবে না। কোনওভাবেই মামুনুল হককে চট্টগ্রামে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

অবশ্যই তাকে প্রতিহত করা হবে। তাকে প্রতিহত না করে আমরা ঘরে ফিরব না। সমাবেশ শেষে সমাবেশস্থলে মামুনুল হকের একটি কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

প্রসঙ্গত, হাটহাজারী সদরের পার্বতী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ২৫ নভেম্বর থেকে তিন দিনব্যাপী ‘তাফসীরুল কোরআন মাহফিল-২০২০’ আয়োজন করেছে ‘আল আমিন সংস্থা’ নামে একটি সংগঠন।

প্রতি বছর শীতে সংস্থাটি এই মাহফিলের আয়োজন করে থাকে। মাহফিলের শেষ দিন শুক্রবার মামুনুল হককে ওই মাহফিলে অতিথি করা হয়েছে।

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য অপসারণের হুমকি দিয়ে আলোচনায় আসা মামুনুল হক। যিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও যুব মজলিসের সভাপতি। এছাড়া নবগঠিত হেফাজতে ইসলামের কমিটিতে তিনি যুগ্ম মহাসচিব পদে আছেন।