কক্সবাজারে ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মো. সোহেল রানা (২৭) নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।

বিয়ের এক মাস না যেতেই কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় তাকে হত্যা করা হলো। শনিবার দিবাগত রাতে চকরিয়া পৌর শহরের ভরামুহুরী এলাকায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি।

নিহত সোহেল রানা চকরিয়া পৌর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক। তিনি পৌরসভার পালাকাটা এলাকার ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. রকিবের ছেলে। চলতি মাসেই তার বিয়ে হয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে একদল সন্ত্রাসী সোহেল রানার ওপর হামলা করে। এ সময় তারা তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

নিহতের চাচা মো. ফরিদ ও বোন সুমি আকতার জানান, শনিবার রাতে বাড়ি থেকে সোহেলকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় সেখানে ৪-৫ জন একসঙ্গে গিয়েছিল। যখন তারা গাড়ি থেকে নামে তখন মরিচের গুঁড়া মারে দুর্বৃত্তরা। তারপর হাতুড়ি ও ধামা দিয়ে মাথায় আঘাত করে তারা। জমির নামে এক ব্যক্তি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

চকরিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনার পর পরই হামলায় জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তার নাম আবদুল মান্নান (৩৪)। তিনি হাজিপাড়ার কবির আহমদের ছেলে। নিহত সোহেলের বাবা আবদুর রকিম জানান, ভরামুহুরী হাজি পাড়ায় তাদের ক্রয়কৃত একটি জায়গা রয়েছে। সেই জায়গা দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালায় ভূমিদস্যু-সন্ত্রাসীরা।

এই খবর পেয়ে তার ছেলেসহ আরো কয়েকজন সেখানে ছুটে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে একা পেয়ে হাজি পাড়ার নুরুল আলম ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা সোহেলকে পেছন থেকে হাতুড়ি, গাছের বাটাম দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে।

এতে ঘটনাস্থলেই পড়ে থাকে সোহেলর নিথর দেহ। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশরাফ হোসেন জানান, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

ঘটনায় আরো যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে।

ঘটনার বিষয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারি পুলিশ সুপার মো. তফিকুল আলম  বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হামলায় জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। জমির বিরোধ নিয়ে এই হামলার ঘটনায় আরো যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে রয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে হামলাকারীরা পলাতক রয়েছেন।

বিয়ের ২৪ দিনের মাথায় সন্ত্রাসী হামলায় স্বামী সোহেলকে হারালেন নববিবাহিতা কলি। সোহেল বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন গত ৪ নভেম্বর।

পেকুয়া উপজেলা কৃষকলীগ নেতা মেহের আলীর কন্যা কলির সঙ্গে ২৪ দিন আগে মহাধুমধামে বিয়ে হয় দুজনের। সেই বিয়ের মেহেদীর রং না মুছতেই স্বামী সোহেলকে হারালেন কলি।

শনিবার দিবাগত রাতে মর্মান্তিক এই ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোহেলের নির্মম খুনের ঘটনাটি নিয়ে আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।

অবিলম্বে সোহেলের খুনি সকলকে দ্রুতসময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতেও সোচ্চার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।