গ্লোবের ব্যানকোভিড এখন বঙ্গভ্যাক্স!

গ্লোবের ভ্যাকসিনের নাম এখন বঙ্গভ্যাক্স

গ্লোব বায়োটেকের করোনা ভ্যাকসিনের নাম ব্যানকোভিড থেকে বঙ্গভ্যাক্স করা হয়েছে। স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নানের পরামর্শে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার গ্লোবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এর আগে তেজগাঁওয়ে গ্লোব বায়োটেকের অফিসে ব্যানকোভিডের তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল নিয়ে এক ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। ওই ব্রিফিংয়ের সময় স্বাস্থ্য সচিব ভ্যাকসিনের নাম পরিবর্তনের এ প্রস্তাব দেন।

এ সময় তিনি বলেন, ব্যানকোভিডের নাম শুনে কেমন যেন ব্যান ব্যান মনে হয়। তাই বঙ্গভ্যাক্স রাখার প্রস্তাব করেছি।

এদিকে তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে আগ্রহ না দেখানোয় আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি বাতিল করেছে গ্লোব বায়োটেক।

গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (মান ও নিয়ন্ত্রক) ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গতকাল সোমবার নতুন প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিআরও বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। খুব দ্রুত বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) ট্রায়ালের আবেদন করবে বলে জানিয়েছে গ্লোব।

ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল করতে ২৯ আগস্ট কাজ শুরু করে গ্লোব ও আইসিডিডিআরবি। দুই পক্ষের মধ্যে ২৪ সেপ্টেম্বর গোপনীয়তা চুক্তি (নন ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট) এবং গত ১৪ অক্টোবর মানবদেহে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন ‘ব্যানকোভিড’ ট্রায়ালের জন্য দেশে ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেকের সঙ্গে আইসিডিডিআরবি এক সমঝোতা স্মারক সই করে।

তবে ট্রায়ালে কম আগ্রহ ও গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগে আইসিডিডিআরবির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করলো গ্লোব বায়োটেক।

আরো পড়ুনঃ গ্লোবের ভ্যাক্সিনের ইন্ডিপেনডেন্ট রিভিউ 

তবে বিষয়টি নিয়ে আইসিডিডিআরবি কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যন হারুনুর রশিদ মঙ্গলবার বলেন, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম এগিয়ে নিতে গত তিন মাসে আইসিডিডিআরবির কোনো অগ্রগতি নেই।

“আমরা খুবই বিরক্ত এই বিষয়টি নিয়ে। এ কারণে গতকাল তাদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি।”

গ্লোবের এই অবস্থানের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আইসিডিডিআরবির মিডিয়া ম্যানেজার তারিফ হাসান বলেন, “এ বিষয়ে আইসিডিডিআরবি এখন কোনো কথা বলবে না।”

গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির দৌড়ে থাকা একমাত্র বাংলাদেশি কোম্পানি, যার টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

সারা বিশ্বে যেসব টিকা তৈরির কাজ হচ্ছে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর মধ্যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্যায়ে আছে এমন ৪২টি টিকার একটি তালিকা এবং ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগের অবস্থায় (প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) থাকা ১৫৬টি টিকার আরেকটি তালিকা রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। ওই তালিকায় বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেকের তিনটি টিকার নাম রয়েছে।

৩ জুলাই তেজগাঁওয়ে গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে গ্লোব বায়োটেকের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির চেষ্টার ঘোষণা দেওয়া হয়।

৫ অক্টোবর আরেক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করে ‘ব্যানকোভিড’ সম্ভাব্য টিকা ‘কার্যকর ও সম্পূর্ণ নিরাপদ’ প্রমাণিত হয়েছে। এখন তারা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআসি) আবেদন করবে।

১৪ অক্টোবর টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য আইসিডিডিআরবির সঙ্গে গ্লোব বায়োটেকের এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়।

পরে নতুন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেকের তৈরি করা সম্ভাব্য টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল নেপালও আগ্রহ দেখায়।