সময়টা বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের।সারা ভারতবর্ষ তখন ব্রিটিশ শাসনের অধীনে। তখনকার দিনে মেডিকেল শিক্ষাব্যবস্থা ও চিকিৎসাখাত আজকের মতো সমৃদ্ধ ছিলোনা।
ভারতীয় উপমহাদেশের বিশাল একটা জনগোষ্ঠীর বাস ছিলো উত্তর -পূর্ব অঞ্চলে।এ বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষার অন্যান্য শাখাগুলো মোটামুটি ঠিকঠাক থাকলেও মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিলো মাত্র দুইটিঃ
১।কলকাতার ক্যামপেল মেডিকেল স্কুল ও
২।ঢাকার মিডফোর্ড মেডিকেল স্কুল।
এ বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনের তাগিদে ময়মনসিংহের বাগমারাতে ১৯২৪ সালে একটি নতুন মেডিকেল স্কুল যাত্রা শুরু করে যেটি ছিলো ভারতের এ প্রদেশের মধ্যে তৃতীয়।
তৎকালীন ভারতীয় গভর্নর ভিক্টর বুলওয়ার লিটন এর নাম অনুসারে প্রতিষ্ঠিত হয় “The Lytton Medical School”।
পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে এটিকে ” ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক)” নামকরণ করা হয়।
অবস্হানঃ
বাগমারাতে যাত্রা শুরু হলেও ১৯৭২ সালে এটিকে চরপাড়ায় স্থানান্তর করা হয়।
শহরের চরপাড়ায় ৮৪ একর জুড়ে আছে বিস্তৃত কলেজ ক্যাম্পাস যার মধ্যে ১৫০০ শষ্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, ছাত্রীনিবাস, ব্যাংক, মসজিদ, ক্যান্টিন, নার্সিং কলেজ, মিলনায়তন, পরমাণু চিকিৎসাকেন্দ্র, ইন্টার্নী পুরুষ এবং মহিলা হোস্টেল অন্তর্ভুক্ত।
শিক্ষাব্যবস্থাঃ
- ১৯২৪ সালে চার বছর মেয়াদি এম.এল.এফ কোর্স চালু।
- ১৯৬২সালে নতুন নামকরণের পর এম.এল.এফ বাদ দিয়ে এম.বি.বি.এস কোর্স চালু।
- ১৯৬২ সালে মাত্র ৩২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে কলেজের প্রথম ব্যাচ “ম-০১” এর যাত্রা শুরু।
- স্বাধীনতার পর ১৯৭৯ সালে অর্থোপেডিক্স,১৯৮৮ সালে হৃদরোগ বিভাগ, ১৯৯২ সালে সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার মেডিসিন ও আলট্রাসাউন্ড চালু, ২০০০ সালে প্রথম পোস্টগ্রাজুয়েশন কোর্স হিসেবে ডিপ্লোমা ইন চাইল্ড হেলথ চালু হয়।
- ২০০২ সালে চালু হয় ২৭ টি পোস্টগ্রাজুয়েশন কোর্স।
অনুষদ ও বিভাগঃ
- Anatomy
- Physiology
- Biochemistry
- Dental Surgery
- Pathology
- Microbiology
- Pharmacology
- Forensic Medicine
- Community Medicine
- Medicine
- Neurology
- Respiratory Medicine
- Nephrology
- Gastroenterology
- Endocrinology
- Cardiology
- Hepatology
- Hematology
- Surgery
- Urology
- Ortho Surgery
- Burn & plastic
- Neuro Surgery
- Pediatrics Surgery
- Gynae & Obs
- Pediatrics
- Neonatology
- Opthalmology
- ENT & Head Surgery
- Radiology & Imaging
- Radiology
- Anesthesiology
- Dermatology
- Psychiatry
হোস্টেলঃ
কলেজটির যাত্রা বাগমারাতে হওয়ায় ছাত্রনিবাস এখানে অবস্থিত।
ছাত্রীনিবাস,ইন্টার্নী ছেলেদের “শহীদ ডা মিলন হোস্টেল ” এবং ইন্টার্নী মেয়েদের “ইন্টার্নী ডাক্তার মহিলা হোস্টেল” ক্যাম্পাসের ভেতরে অবস্থিত।
ক্লাবসমূহঃ
- মেডিসিন ক্লাব
- সন্ধানী
- স্পন্দন
- ময়মনসিংহ মেডিকেল ডিবেটিং সোসাইটি
- বৃত্ত
- অক্ষর
- ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ফটোগ্রাফি সোসাইটি ইত্যাদি।
কৃতি শিক্ষার্থীঃ
বিখ্যাক চিকিৎসক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, মুক্তিযোদ্ধারা এই কলেজে লেখাপড়া করেছেন।তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য –
- ডা.লোটে শেরিং (ম-২৮;ভূটানের প্রধানমন্ত্রী)।
- ডা.টান্ডি দর্জি(ম-২৪;ভূটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী)।
- ডা.মেহেদী হাসান খান(ম-৪১;অভ্র কী বোর্ডের জনক)।
- আ ক ম মাহবুবুল আলম ভাসানী, মো.ওয়ালীউল্লাহ,সুপ্রিয় দাস ও মকবুল হোসেন মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন।
- অধ্যাপক ডা মুহসীন খলিল, অধ্যাপক ডা মনসুর খলিল স্যার এর মতো কিংবদন্তিদের কলেজ ছিলো এ মমেক।
এক নজরে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
- নামঃ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ।
- সংক্ষিত রূপঃমমেক/এমএমসি।
- ধরণঃসরকারি।
- স্হাপিতঃ১৯২৪ সাল।
- নীতিবাক্যঃজানার জন্য এসো,সেবার জন্য যাও।
- অধিভুক্তিঃঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
- অবস্থানঃচরপাড়া,ময়মনসিংহ, বাংলাদেশের।
- অধ্যক্ষঃপ্রফেসর ডা চিত্তরঞ্জন দেবনাথ।
- শিক্ষার্থীঃ১৩০০+।
- স্নাতকঃএম.বি.বি.এস ও বি.ডি.এস।
‘জানার জন্য এসো,সেবার জন্য যাও’
এই নীতিবাক্য ধারণ করে মমেক দেশের সেবার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।আজ ১৩ সেপ্টেম্বর আমাদের প্রাণপ্রিয় কলেজের ৫৮ তম জন্মবার্ষিকী।
প্রার্থনা করি যেন মমেক তার নীতিবাক্যকে ধারণ করে আরো অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারে।শুভ জন্মদিন মমেক।❤
সবগুলো ছবি দেখতে ক্লিক করুন এখানে