করোনাকালে সফল উদ্যোক্তা খুবির নাফিসা

অনলাইনে নারীদের প্রসাধনী সামগ্রী বিক্রি করে সফল উদ্যোক্তা হয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত ডিসিপ্লিনের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাফিসা আমরিন।

নাফিসা বলেন, বাংলাদেশের সামাজিক, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও রক্ষণশীল মনোভাবের কারণে নারীদের উদ্যোক্তা হওয়ার সংস্কৃতি এখনো সেভাবে গড়ে ওঠেনি। তবে এসব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি আত্মনির্ভরশীল হওয়ার অন্যতম উপায় উদ্যোক্তা হওয়া।

তিনি বলেন, করোনার মধ্যে বাসায় বসে ছিলাম। ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছিলো না, অনেকটা হতাশায় দিন কাটছিলো। তখন মনে হচ্ছিলো যে কিছু একটা করি। তখনই বিজনেস এর আইডিয়া মাথায় আসে এবং তখনই শুরু।

প্রথম দিকে ভয়ের ছিল যে কেমন হবে সামনের পথচলা, মানুষ কেমন ভাববে, ফ্যামিলি কি ভাববে? কিন্তু ফ্যামিলি অনেক সাপোর্ট করেছিল।

প্রথম দিকে অনেক প্রশ্ন তুলেছে যে, আমার কি ফ্যামিলির অবস্থা খারাপ নাকি? কিন্তু পরে আবার বলেছে, এর তো সব ঠিক আছে তাও হঠাৎ কেন ব্যবসার আইডিয়া মাথায় আসলো? তবে আস্তে আস্তে সবাই বুঝতে পারছে এবং পরিবার থেকে অনেক সাপোর্ট করছে। সবাই সহযোগীতার ফলেই এতদুর আসা।

বর্তমানে অনেক সফলতা আসছে। আগের আমার একেকবারে ৩/৪ টা অর্ডার আসতো এখন ৩০-৪০ টা অর্ডার আসে। এমনকি এখন আমি অর্ডার নিয়ে পারি না।

কর্মসংস্থান তৈরির ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি যেমন একটা মাধ্যমে বিজনেস শুরু করি, সেরকম মাধ্যমের সন্ধান দিয়েছি।অনেক গরীব মানুষ আছে যে প্রোডাক্টগুলো ডেলিভারি করে দিয়েছে, ফলে তারাও কিছু ইনকাম করতে পারছে। যারা বিজনেস করে আমি তাদেরকে বলেছি যে এদের ডেলিভারি দেন, এর মাধ্যমে তারা লাভবান হয়েছে।

এই উদ্যোক্তা মনে করেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে মেয়েদের উদ্যোক্তা হওয়া তেমন একটা বাঁধা না। এমনকি মেয়েরাই বেশি উদ্যোক্তা হতে চাচ্ছে বা হচ্ছে এবং সফলতা অর্জন করছে। প্রথম দিকে হীনমন্যতা কাজ করলেও যখন সফলতা আসে তখন এগুলো কিছুই মনে হয় না। কিন্তু সে পর্যন্ত যেতে অনেক বেশি স্ট্রাগল করতে হয় এবং সময় দিতে হয়।

‘Girls Passion’ নামে একটি পেজের মাধ্যমে পরিচালিত হয় তার ব্যবসা। সাথে একটি গ্রুপও সক্রিয় রয়েছে তার। এখানে মূলত চায়না গার্লস এক্সেসোরিস চায়না প্রোডাক্ট আনা হয় । যখন যেটা মনে হয়, শখের উপর ডিপেন্ড করে সেগুলা নেওয়া হয়।

বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রথম ১ বছর অনেক ইফোর্ট দেওয়া লাগছে। অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এখন মোটামুটি ভালো পরিচিতি পাওয়ায় জন্য এত ইফোর্ট দেওয়া লাগে না। এখন সবাই জানে যে আপু সেল দেয়, ভালো প্রোডাক্ট দেয়।

নাফিসা আরও বলেন,বর্তমান প্রেক্ষাপটে মেয়েদের উদ্যোক্তা হওয়া তেমন একটা বাধা না। এমনকি মেয়েরাই বেশি উদ্যোক্তা হতে চাচ্ছে বা হচ্ছে এবং সফলতা অর্জন করছে। প্রথম প্রথম হেজিটেশন হয় কিন্তু পরবর্তীতে অনেক বেশি সফলতা আসে তখন এগুলো কিছুই মনে হয় না। অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয় এবং সময় দিতে হয়।