৫ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ২২ বস্তা কাগজ পোড়ালেন বেগম রোকেয়ার ডিন!

৫ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ২২ বস্তা কাগজ পোড়ালেন বেগম রোকেয়ার ডিন!

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি), রংপুর  এর অর্থসহ হিসাব শাখার পরিচালক এবং বিজ্ঞান বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. আর এম হাফিজুর রহমান সেলিম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের মধ্যেই বিপুল পরিমাণ মূল্যবান কাগজপত্র পুড়িয়ে দিয়েছেন।

তিনি একাই দাঁড়িয়ে থেকে কাজটি করেন। এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অধ্যাপক হাফিজুর রহমান এর আগে কারমাইকেল কলেজের শিক্ষক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের কিছুদিনের মধ্যেই ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার পদটি বাগিয়ে নেন।

এরপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর সঙ্গে সখ্যতার সুযোগে তিনি বিজ্ঞান বিভাগের ডিন পদ ছাড়াও অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক পদটি লাভ করেন।

এসময় কেনা-কাটাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালকের পদটি পাওয়ার যোগ্যতা তার নেই বলে অভিযোগ ওঠে।

এরই মধ্যে কাউকে না জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার সময় ২২ বস্তা কাগজপত্র তিনি পুড়িয়ে দেন। যার মধ্যে বিভিন্ন অনিয়মের কাগজপত্র ও ভুয়া ভাউচারসহ অনেক কাগজ ছিল বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদুল ইসলাম বলেন, এভাবে কোনও কাগজ পুড়িয়ে ফেলতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি নিতে হয়ে। সেটি তিনি নিয়েছেন কিনা জানি না।

বিজ্ঞান বিভাগের কাগজ হলে সে বিষয়ে সবার উপস্থিতিতেই পোড়ানো উচিত ছিল।

তিনি বলেন, তিনি বর্তমানে অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালকের পদে আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তিনি তা হতে পারেন না।

কাগজ পোড়ানোর বিষয়টি স্বীকার করে অধ্যাপক হাফিজুর বলেন, তিনি বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে তার অধীনস্থ বিভাগগুলোর ভর্তি পরীক্ষার কাগজপত্র সংরক্ষণ করতে পারেন।

প্রতি বছর গড়ে ৭/৮ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। যে রুমে এসব রাখা হয়েছিল সেখানে জায়গা হচ্ছিল না। অধীনস্থ বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে কাগজ পোড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তার দাবি, ২২ বস্তা কাগজ ছিল। দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সময় লেগেছে পোড়াতে। ২/১ জন এসেছিলেন তারা চলে যান। তিনি একাই পুরোটা সময় ছিলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বরেন, তিনি সততার সঙ্গে কাজ করেন। কোনও কোনও মহল ঈষার্নিত হয়ে অনেক কথা বলে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মতিয়ার রহমান বলেন, গত তিন বছরে ভর্তি পরীক্ষায় বেশ কয়েকজন প্রক্সি পরীক্ষার্থী ধরা পড়েছে। এ নিয়ে মামলা হয়েছে। আরও অনেক অভিযোগ আছে।

ফলে কেন তাড়াহুড়া করে কাগজ পোড়ানো হলো তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।