আট আসামির ডিএনএ’র নমুনায় মিল, চার জনের ছাত্রত্ব বাতিল

এমসি কলেজে গণধর্ষণ

সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণীকে গণধর্ষনের ঘটনায় আট আসামির ডিএনএ’র সাথে ঘটনাস্থলের ডিএনএ নমুনার মিল পাওয়া গেছে। গত এক ও তিন অক্টোবর আট জনের ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়। পরে সেই নমুনা ঢাকায় এনে পরীক্ষা করা হয়।

পরীক্ষার পর ডিএনএ’র প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। আদালত সেই প্রতিবেদন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করেন। সেই প্রতিবেদনে ঘটনাস্থলের নমুনার সাথে আট আসামির ডিএনএর মিল পাওয়া যায়।

রোববার রাতে ডিএনএ রিপোর্ট হাতে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের।

তিনি বলেন, ডিএনএ রিপোর্টে আসামিদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। অল্প সময়ের মধ্যেই চার্জশিট দেয়া হবে এবং বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

যাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে তারা হলেন- মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, রাজন মিয়া আইনুদ্দিনসহ আরও দু’জন।

এদিকে, গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত চার আসামির ছাত্রত্ব এবং সার্টিফিকেট বাতিল করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

পাশাপাশি তাদের স্থায়ীভাবে এমসি কলেজ থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলেন, সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাসুম ও রবিউল হাসান।

এদের মধ্যে, সাইফুর রহমান এমসি কলেজ ছাত্রলীগ কর্মী, কলেজের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাছুম, বহিরাগত ছাত্রলীগ কর্মী রবিউল এবং তারেক আহমদ। মামলার অপর তিন আসামি অজ্ঞাত।

২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৭টার দিকে সিলেট এমসি কলেজের হোস্টেলে ওই গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।

অভিযুক্তরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে এসএমপির শাহপরাণ থানায় মামলা করা হয়েছে। নির্যাতিত ওই তরুণীর স্বামী বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

মামলায় আসামিরা হল- সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক, হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর, দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের রবিউল ইসলাম ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুম। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।

প্রসঙ্গত, এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এই তরুণী। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই তরুণীকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে বেঁধে রাখা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন।