ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর

ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে সরকারি/প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ করে দিতে চান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন কারিগরি শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা।

এ ছাড়া ডিপ্লোমা ডিগ্রির মানদ- নির্ধারণের দাবি করেছেন কারিগরি শিক্ষার্থীরা।

আটটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হল DU,CU,KU,RU, BUET, KUET, CUET, RUET.

চিঠিতে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে সরকারি/প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছেন।

বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়/প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থাকলে অধিকসংখ্যক মেধাবী শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারবে। দেশে-বিদেশের কর্মক্ষেত্রে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সামর্থ্য ও সুনাম প্রশংসনীয়।

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তিতে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছেন। তাদের অনেক উদ্ভাবনই এখন দেশে-বিদেশে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশ্বের উন্নত দেশে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান।

ফলে সেসব শিক্ষার্থী নিজ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। পর্যাপ্ত দক্ষতার অনুপস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক পরিম-লে উন্নয়নশীল দেশগুলো অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে।

অসম প্রতিযোগিতা দূর করে জাতীয় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় দেশের শিক্ষার্থীদের বৃত্তিমূলক ও তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিজ্ঞান শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরের ওপর সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করেছে।

শিক্ষামন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াস, বাংলাদেশ (আইডিইবি)-এর সাধারণ সম্পাদক মো. সামসুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা বলছি, তা হলে তাদের (ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারী) কেন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষায় বাধা থাকবে। তিনি বলেন, সরকারের ২০১০ সালের শিক্ষানীতিতে উল্লেখ আছে, কারিগরি ডিপ্লোমা পর্যায়ে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীকে যোগ্যতা যাচাই করে ক্রেডিট সমন্বয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট স্নাতক পর্যায়ের উচ্চশিক্ষা কোর্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু মাত্র কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সুযোগ আছে।

এটি নিয়েও একটা টেকনিক্যাল ত্রুটি আছে। সেটি হচ্ছে, ডিপ্লোমাধারীরা ৪ বছরের কোর্স সম্পন্ন করেছে। এর পর আবার বিএসসি করতেও যদি ৪ বছর লাগে তা হলে তার দুই ডিগ্রি শেষ করতে ৮ বছর ব্যয় হচ্ছে। এ জন্য তাদের ক্রেডিট ওয়েবার দেওয়া দরকার।

ঢাকা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (ডুয়েট), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইউনিভার্সিটি, বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে খুব সীমিতসংখ্যক ডিপ্লোমাধারী বিএসসি সম্পন্ন করার সুযোগ পায়।

অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন সুযোগ নেই। এর বাইরে কিছু প্রাইভেট ভার্সিটি রয়েছে, যেখানে ৩ বছরের ব্যাচেলর ডিগ্রি। এর সংখ্যাও খুব কম। আবার অনেক প্রাইভেট ভার্সিটি রয়েছে যেখানে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের জন্য ক্রেডিট কম। ভার্সিটিগুলোয় এ ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী নেবে; কিন্তু তা ৪ বছর মেয়াদি এবং এইচএসসি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একই ব্যাচে।

আবার আইইবি অন্তর্ভুক্ত ভার্সিটিগুলোয় ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে; কিন্তু তারা এ ক্ষেত্রে কোনো ক্রেডিট ছাড় পাবে না এবং কোর্স সময়সীমা ৪ বছর। এইচএসসি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একই ব্যাচে ক্লাস করতে হয়।

Source: Amader Somoy