“বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আরেকবার কটূক্তি করলে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেব”

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্কিত বক্তৃতা দেয়া মাওলানা মামুনুল হককে হুঁশিয়ারি দিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেছেন, ‘আপনারা বুড়িগঙ্গার ধারে-কাছে আইসেন। সবকটাকে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়া হবে।’

বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) বিকালে ‘উগ্র সাম্প্রদায়িকতা এবং স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি জামাতের নাশকতা, জ্বালা পোড়াও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচির আয়োজন করে ছাত্রলীগ।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় জামাত-শিবিরকে হুশিয়ার দিয়ে বলেন,

‘আমরা যদি মাঠে নামি তাহলে আপনারা কিন্তু পালিয়ে যাওয়ার সুযোগও পাবেন না। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে আবারও ধৃষ্টতা দেখান, তাহলে কিন্তু আমরা দাঁতভাঙা জবাব দেব। সারাদেশ পাঁচ মিনিটে অচল করে দেওয়ার ক্ষমতা ছাত্রলীগের আছে।’

ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা এ দেশ পেয়েছি। জাতির পিতাকে নিয়ে দেশবিরোধী কুচক্রি মহল, যারা পাকিস্তানের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে, যারা ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে, তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলে।  সাহস থাকলে ছাত্রলীগের সঙ্গে মোকাবিলা করেন।

বঙ্গবন্ধু এদেশে ইসলামকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের ১৭ হাজার নেতাকর্মী শহীদ হয়েছিলেন, আমরা রক্ত দিতে জানি। সুতরাং ওই মাইকের সামনে বসে বড় বড় কথা না বলে মাঠে আসেন।

এই মামুনুল হক জঙ্গিবাদ সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা জাতির পিতার ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলে। মূর্তি আর ভাস্কর্যের পার্থক্য তারা বোঝে না।

ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘এই অসাম্প্রদায়িক দেশে কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়াতে পারবে না। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যে হাত দিয়ে সেবা করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, সেই হাত দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে হঠানোর জন্য একইভাবে কাজ করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি নষ্ট-ভ্রষ্ট মামনুল হককে উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, আপনারা বুড়িগঙ্গার ধারে আইসেন, সবকটাকে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হবে। সাহস থাকলে ছাত্রলীগের সঙ্গে মোকাবিলা করেন।

আমি সরকারের প্রত্যেকটি জায়গার সকলকে অনুরোধ জানাবো, এই মামুনুল হক জঙ্গিবাদ সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। জঙ্গিবাদকে যারা সামনে নিয়ে এগিয়ে যায়, তাদের কিন্তু এখনই লাগাম টানতে হবে। তাদের যে লেজ হয়েছে সেটি কেটে দেওয়ার সময় এসেছে।’

সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘যারা সাম্প্রদায়িকতার বীজ এ দেশে ছড়িয়ে দিতে চায়, তারা দেশদ্রোহীর শামিল বলে বিবেচিত হবে। তাদের ভুলে গেলে চলবে না, এদেশে দেশদ্রোহীদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলানো হয়েছে। আপনারাও কিন্তু সেই পথে ধাবিত হচ্ছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে মামুনুল হকদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবো। যারা ধর্মীয় অপব্যাখ্যা করে মানুষের মগজধোলাই করে, তাদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে৷’

এ সময় তিনি মামুনুল হকদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন।

ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আজকে দেশের সমাজকে রক্ষণশীলতার চাদরে আবদ্ধ করার জন্য ষড়যন্ত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি।

একাত্তরে যাদের আমরা পরাজিত করেছি, আজকে তাদের আস্ফালন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, মফস্বল শহরে দেখতে পাচ্ছি। আজকে তাদের উদ্দেশ্য করে শিক্ষার্থী হিসেবে বলতে চাই, বাংলা মায়ের কোলে আমরা যেমন শান্তিপ্রিয় শান্ত ছেলে হয়ে থাকতে জানি, ঠিক একরকমভাবে মৌলবাদ প্রতিরোধ আকাশ বজ্র হয়ে ঝরতে জানি।’

লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মেহেদী হাসান।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান তুষার, মাজহারুল ইসলাম শামীম, সৈয়দ আরিফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, নাজিম উদ্দিন, সাহিত্য সম্পাদক আসিফ তালুকদার, উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার, ফরিদা পারভীন প্রমুখ।