সঞ্জিতকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দেখতে চায় না শিক্ষার্থীরা

ধর্ষণ-নিপীড়নের বৈধতা দানকারী ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিতকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দেখতে চায় না শিক্ষার্থীরা – ছাত্র ইউনিয়ন

ধর্ষণ – নারী নিপীড়নকে বৈধতা দেওয়া ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসকে শিক্ষার্থীরা আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছে ছাত্র ইউনিয়ন।

যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ ও সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম বলেন,

“গতকাল সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে তার বক্তৃতায় ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ‘স্বাধীনতাবিরোধী ছাড়া অন্য কোনো নারী যদি নির্যাতনের শিকার হয়…তা প্রতিহত করবো’

এমন একটি বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা মনে করি, এই বক্তব্য ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে ক্রমাগত ঘটে চলা ধর্ষণ- নারী নির্যাতনের ঘটনাকে বৈধতা দেওয়ার অপচেষ্টা।

একই সাথে,
আমরা মনে করি, এই বক্তব্য বিরুদ্ধ রাজনৈতিক মতকে দমন করার রাস্তা হিসেবে যৌন নিপীড়নকে সাংগঠনিক ছাড়পত্র দেওয়ার শামিল।

এই বক্তব্যের পর, তাদের করা যেকোনো ধর্ষণের ঘটনার ভিকটিমকে ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ বলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবে না তাদের নেতাকর্মীরা।

স্বাধীনতার ঊনপঞ্চাশ বছর পরে নির্যাতনের শিকার নারীর মধ্যে ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ খোঁজার মাধ্যমে সঞ্জিত তার সংগঠনের নারী নিপীড়কদের বাঁচানোর অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন।”

নেতৃবৃন্দ বলেন, “ছাত্রলীগ পুরোদস্তুর একটি ধর্ষক-নিপীড়ক প্রস্তুতকারী কারখানায় পরিণত হয়েছে। সেখানে অন্যায় এর পর তার বৈধতা দেওয়ার জন্য উঠে পরে লাগেন তাদের দায়িত্বশীল নেতারা।

সেটা তখন সংগঠনেরই চিন্তার প্রতিফলন বলে প্রকাশিত হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একশোর অধিক ছাত্রীকে ধর্ষণ করা ছাত্রলীগ নেতা মানিককে জনগণ ভুলে যায়নি।

সুবর্ণচরে সন্তানের সামনে জননীর গণধর্ষণ জাতি ভুলে যায়নি। সর্বশেষ সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ভেতরেও ছাত্রলীগ গণধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে।

ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহারের সঙ্গে বিকৃত যৌন চাহিদা তাদের যেকোন সাধারণ নাগরিকের জন্য মূর্তিমান পিশাচে পরিণত করেছে। সম্মতির ধার না ধারা এই নারী নিপীড়কদের বাঁচাতেই সঞ্জিতরা আজ নেতা।

এহেন ছাত্রলীগ সভাপতি নারী নির্যাতনকে বৈধতা দেওয়ার অপচেষ্টা চালাবেন, এতে আমরা একটুও বিষ্মিত হই না।”

ছাত্র ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে একক ছাত্রসংগঠন হিসেবে রণাঙ্গনে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক যোদ্ধা ছাত্র ইউনিয়নের ছিলো। এটি ছিলো একটি গণযুদ্ধ, দেশের সর্বস্তরের মানুষ এতে অংশ নিয়েছিলো।

সঞ্জিত তার সংগঠনের অপকর্মকে বৈধতা দিতে এই রক্তার্জিত স্বাধীনতাকে ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আদর্শকে কলঙ্কিত করেছেন।

যে রাজু শহীদ হয়েছিলেন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের সন্ত্রাস প্রতিহত করতে গিয়ে, সেই রাজু’র নামে স্থাপিত ভাস্কর্যকে তিনি কলঙ্কিত করেছেন।

তার উপস্থিতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সঞ্জিত চন্দ্র দাসকে আর ক্যাম্পাসে দেখতে চায় না।”

You cannot copy content of this page