লাইফ সাইন্স থেকে বুয়েটঃ Master’s of Science in Biochemical Technology

BUET OAB

ইন্জিনিয়ারিং বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার পাশাপাশি এখন বুয়েটে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, প্রোটিন, ডিএনএ, ন্যানোপার্টিকেলস, ড্রাগ ডেলিভারি সহ বিভিন্ন জিনিস নিয়ে গবেষণা হচ্ছে,আর বিশ্ববিদ্যালয়টিতে গবেষণাতে এগিয়ে থাকা অন্যতম বিভাগ হচ্ছে কেমিকৌশল বিভাগ/ Department of Chemical Engineering.

  •  কোন বিষয়ে মাস্টার্স করলে উপরোক্ত বিষয়ে পড়াশোনা আর গবেষণা করা যেতে পারে?
    – বুয়েটে কেমিকৌশল বিভাগের অধীনে এম.এস. সি ইন বায়োকেমিক্যাল টেকনোলজি ( M.Sc in Biochemical Technology) প্রোগ্রামটি কেমিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং আর বায়োলজির মিশ্রণে সাজানো।তাই এই স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম এ পড়ার সুযোগ পেলে একই সাথে ইন্জিনিয়ারিং আর লাইফ সাইন্স এর সাবজেক্টগুলি পড়ার সুযোগ পাওয়া যায় – অনেকটা Bioengineering!
  •  কী কী বিষয় নিয়ে পড়ানো বা গবেষণা হয়?
    বুয়েটের অন্যতম সমৃদ্ধ এবং নতুন একটি ল্যাব – Applied Bioengineering Research Incubator (ABRI)

বেশিরভাগ বায়োকেমিক্যাল টেকনোলজির ছাত্র-ছাত্রী এখানে নিজেদের গবেষণা/ থিসিস করার সুযোগ পায়।এছাড়া এর বাইরেও ডিপার্টমেন্ট এর অন্য ল্যাবে নিজের পছন্দমত প্রফেসর এর সাথে কাজ করার সুযোগ থাকে যদি প্রফেসর পারমিশন দেয়।
এখানে যা নিয়ে পড়া আর গবেষণার সুযোগ রয়েছে

* Bioprocessing
* Quantitative Biology
* Biotechnology
* Protein and Peptide Therapeutics
* Biomaterials
* Nanoparticles/Nanotechnology
* 3D Bioprinting
* Cell Signaling
*Molecular Biology

এছাড়া আরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করা হয়।

  • কারা এই বিষয়ে স্নাতকোত্তর করতে পারবে?
    – কেমিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং
    – বায়োমেডিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং
    – ফার্মাসি
    – বায়োটেকনোলজি
    – জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং
    – মাইক্রোবায়োলজি
    – কেমিস্ট্রি
    – এপ্লাইড কেমিস্ট্রি
    – বায়োকেমিস্ট্রি

উপরোক্ত বিষয় অথবা এর সমমান এর বিষয়ে অনার্স এ ৪.০০ এর মধ্যে মিনিমাম ২.৫০ সিজিপিএ থাকতে হবে যে কোনো UG Recognized বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।(পাবলিক/প্রাইভেট/জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়)

এস.এস. সি এবং এইচ.এস.সি তে মিনিমাম ৩.৫০/৫.০০ থাকতে হবে।

  • পরীক্ষা পদ্ধতি কি কি আর প্রস্তুতি কিভাবে নিতে হবে?
    – নতুন কোর্স হওয়ায় আবেদনকারীর সংখ্যার উপর নির্ভর করে লিখিত/মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। আবেদন করার পর ওয়েবসাইট এ নোটিশ দিবে।
    – নিজ নিজ বিষয়ে ব্যাসিক ঠিক থাকলে আর থিসিস এ ভালো কাজ করলে চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।সিজিপিএ তেমন একটা ম্যাটার করে নাহ।ভাইভা তে লম্বা সময় ধরে প্রশ্ন করে,থিসিস নিয়ে, ফিউচার প্ল্যান নিয়ে জানতে চায়।নিজ সাবজেক্ট রিলেটেড ব্যাসিক প্রশ্ন করতে পারে। সব কিছুর জন্য প্রিপারেশন নিয়ে যাওয়া ভালো।
  • কোর্স সম্বন্ধে আইডিয়া পাওয়ার জন্য স্নাতক লেভেলের Biochemical Engineering I + Biochemical Engineering II কোর্স দুইটির ম্যাটেরিয়ালস পড়া যেতে পারে ( বাধ্যতামূলক নাহ)
  • কয়বছর লাগবে মাস্টার্স শেষ করতে?গ্রেডিং কেমন? তাড়াতাড়ি পাস করে বের হওয়া যায়?
    – মিনিমাম ১.৫- ২ বছর লাগবে শেষ করতে।গ্রেডিং একটু টাফ। ৯০ এ A+ (৪.০০), ৮০ এ A (৩.৫০) এরকম।
    ভালো কাজ করলে থিসিস এ ১.৫ বছর এ বের হওয়া যায়, কিন্তু থিসিস এ সন্তোষজনক কাজ না করলে বের হওয়া কঠিন।

চান্স পাওয়ার পর সুবিধা কি কি?স্কলারশিপ আছে?
– ফুল টাইম মাস্টার্স স্টুডেন্টরা হল এর সুবিধা পাবে।তাছাড়া ট্রান্সপোর্টেশন,মেডিকেল সুবিধা তো আছেই।
ডিপার্টমেন্ট এ বেশ কিছু দিন পর পর কনফারেন্স হয়, ওয়ার্কশপ ও হয় প্রায়ই।
তাই নিজেদের রিসার্চ প্রেজেন্ট করা,অভিজ্ঞ শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে নতুন নতুন স্কিল শেখা, সুবিধার কমতি নাই।

স্কলারশিপ এর একটা অন্যতম বড় সুযোগ আছে এখানে।তবে সেটার জন্য আবেদন করতে হবে প্রথম সেমিস্টার এর রেজাল্ট এর পর + অবশ্যই ফুলটাইম স্টুডেন্ট হতে হবে।

১. পোস্টগ্র্যাজুয়েট ফেলোশিপ – বুয়েটে টপ ৫০ স্টুডেন্ট ( ২০ জন মাস্টার্স + ৩০ জন পি এইচ ডি) কে বুয়েট মাসে ভাতা দিয়ে থাকে।
মাস্টার্স এর স্টুডেন্টরা পায় মাসিক ৩০,০০০/- টাকা।
– সাধারণত প্রত্যেক ডিপার্টমেন্ট থেকে টপ ৩-৪ জন কে ফেলোশিপ দেয়া হয়। Department of Chemical Engineering থেকে এই বছর ৪ জন ফেলোশিপ পেয়েছেন মাস্টার্স এ যার মধ্যে বায়োকেমিক্যাল টেকনোলজি থেকে ১ জন আছেন।

২. টিচিং এসিস্ট্যান্টশিপ – সিজিপিএ ৩.০০ এর উপরে থাকলেই TAship এর জন্য আবেদন করা যায়।এবছর Biochemical Technology থেকে ৫ জন TAship পেয়েছেন।
মাসিক ভাতা – ২২,০০০/- টাকা

৩. রিসার্চ এসিস্ট্যান্টশিপ – সাধারণত কোনো ল্যাবে প্রফেসর এর আন্ডার এ বা প্রজেক্টের ফান্ড থেকে RA নেওয়া হয়। এ বিষয়ে প্রফেসরদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে হয়।
মাসিক ভাতা – ১৮-২৫ হাজার আনুমানিক

কি কি কোর্স নিয়ে পড়তে হয়? নন ইন্জিনিয়ারিং স্টুডেন্টদের জন্য কি পড়তে অসুবিধা হয়?
– মোটেও নাহ।কিন্তু একটু কষ্ট হবেই যেহেতু পড়াশোনার মান বুয়েট স্ট্যান্ডার্ড।কিন্তু ডিপার্টমেন্ট এর টিচাররা অত্যন্ত আন্তরিক।কোনো কিছু না বুঝলে ক্লাস এ প্রশ্ন করা যায়,বা টিচারদের কে মেইল করে উনাদের অ্যাপয়েনমেন্ট নিয়ে সমস্যা খুলে বলা যায়।
প্রথম সেমিস্টারেই থিসিস সুপারভাইজার খুঁজে নেওয়াটা ভালো।বাকি সময় সেই সুপারভাইজার গাইড করে যাবেন যে কোনো অ্যাকাডেমিক বিষয়ে।
কোর্স বিভিন্ন সেমিস্টারে বিভিন্নরকম অফার করা হয়।

এখনো পর্যন্ত যেগুলা অফার করা হয়েছে –
* Advanced Biochemical Engineering
* Biomaterials
*Downstream Bioprocessing

এছাড়া অন্য ডিপার্টমেন্ট থেকে কোর্স নেওয়া যায়,যেমন –
Department of Biomedical Engineering থেকে –
* Advanced Biomaterials
* Artificial Organ and Regenerative Medicine
*Advanced Drug Delivery
Department of Chemistry থেকে –
* Bio-inorganic Chemistry
*Chemistry of Natural Products
Department of Computer Science and Engineering থেকে –
* Computational Proteomics

এছাড়া আরো অনেক কোর্স বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট থেকে নেওয়া যায়,কিন্তু সেটা অবশ্যই সাবজেক্ট রিলেটেড হতে হবে।

মাস্টার্স কমপ্লিট করতে কত টাকা খরচ হয়?
– প্রথম সেমিস্টার – ৩২৩৭ টাকা
– দ্বিতীয় সেমিস্টার – ১৭৩৭ টাকা
– তৃতীয় সেমিস্টার – ১৭৩৭ টাকা
১.৫-২ বছরে আপনার খরচ মাত্র – ৬৭১১ টাকা মাত্র!

বর্তমানে প্রথম ব্যাচ অধ্যয়নরত আছে। তাই যদি বায়োলজি ভালো লাগে আর কেমিক্যাল টেকনোলজি পড়তে চান,গবেষনা এ আগ্রহী হন, লাইফ সাইন্সের ল্যাব এক্সপেরিমেন্ট গুলোর মধ্যে ডুবে থাকতে চান তাহলে বায়োকেমিক্যাল টেকনোলজি তে স্নাতকোত্তর আপনার জন্য।

Maliha Mehjabin
Graduate Research Fellow,
M.Sc student (Biochemical Technology – 1st Batch)

Department of Chemical Engineering, BUET

You cannot copy content of this page