পাঠাও সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহর খন্ড-বিখন্ড দেহ উদ্ধার

ফাহিম সালেহ

বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম `পাঠাও’ সার্ভিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহর (৩৩) টুকরা করা লাশ উদ্ধার করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ (এনওয়াইপিডি)।

ফাহিম সালেহ
ফাহিম সালেহ

১৪ জুলাই বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ম্যানহাটনের ইস্ট হাউস্টন স্ট্রিট ও সাফোক স্ট্রিট–সংলগ্ন ফাহিম সালেহর অভিজাত অ্যাপার্টমেন্ট থেকে লাশটি টুকরা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

জানা গেছে, ১৪ জুলাই এক আত্মীয়ের ফোন কলের সূত্র ধরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পুলিশ ওই অ্যাপার্টমেন্টে যায়।

অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ব্যাগ ও একটি ইলেকট্রিক করাতের পাশে ফাহিম সালেহর লাশ দেখতে পায় পুলিশ।

ইলেকট্রিক করাত দিয়ে মৃতদেহ থেকে হাত, পা ও মাথা বিচ্ছিন্ন করে পাশের একটি ব্যাগে রাখা হয়। এনওয়াইপিডি পুরো বিষয়টি তদন্ত করছে। এখন পর্যন্ত এ নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

এনওয়াইপিডির বরাত দিয়ে নিউইয়র্কের ‘ডেইলি নিউজ’ পত্রিকা জানিয়েছে, সোয়া দুই মিলিয়ন ডলার মূল্যের অ্যাপার্টমেন্টে পাওয়া ক্ষতবিক্ষত লাশটি ফাহিম সালেহর।

বাংলাদেশে পাঠাও কোম্পানিতে নিজের শেয়ার বিক্রি করে নাইজেরিয়াতে একই ধরনের ব্যবসা শুরু করেছিলেন পেশায় ওয়েব ডেভেলপার ফাহিম সালেহ । গত জানুয়ারিতে নাইজেরিয়ায় ‘গোকাডা’ নামের কোম্পানিটি সরকারি নিষেধাজ্ঞায় পড়ে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাহিম সালেহর বোন পুলিশকে ফোন করে জানান, তিনি তাঁর ভাই ফাহিম সালেহর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।

পুলিশকে তিনি একটু খোঁজ নিতে অনুরোধ করেন। বোনের ফোন পেয়েই ওই অ্যাপার্টমেন্টে একা থাকা ফাহিম সালেহকে খুঁজতে যায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে তাঁর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার হয়।

অ্যাপার্টমেন্টের সিসি ক্যামেরা থেকে দেখা গেছে, ১৩ জুলাই ফাহিম সালেহ ভবনের সপ্তম তলায় তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে যাওয়ার জন্য লিফটে উঠছেন। এ সময় স্যুট পরা, হাতে গ্লাভস ও মুখে মাস্ক পরা একজনকে তাঁর পেছনে যেতে দেখা গেছে।

এর পরই হয়তো ফাহিমকে হত্যা করা হয়। ওই ব্যক্তিকে পেশাদার হত্যাকারী হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাঁর হাতে একটি ব্রিফকেস ছিল।

ফাহিম সালেহর জন্ম ১৯৮৬ সালে। তাঁর বাবা সালেহ উদ্দিন চট্টগ্রামের, আর মা নোয়াখালীর মানুষ। ফাহিম পড়াশোনা করেছেন আমেরিকার বেন্টলি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফরমেশন সিস্টেম নিয়ে।

তিনি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের অন্যতম উদ্যোক্তা। ২০১৪ সালে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় গিয়ে পাঠাও চালু করে নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন তিনি।

ফাহিম নাইজেরিয়া ও কলম্বিয়ায় এমন আরও দুটি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ কোম্পানির মালিক। ইন্দোনেশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশেও তিনি ব্যবসা বিস্তৃত করেছিলেন।

ইব্রাহীম চৌধুরী, নিউইয়র্ক
প্রথম আলো ও নিউইয়র্ক নিউজ

ক্রিয়েটিভ বলতে যা বোঝায়, তার নাম ফাহিম সালেহ। যেখানেই হাত দিছেন, সোনা ফলাইছেন।

মাত্র ৩৩ বছর বয়সে ম্যানহাটনে ২.২ মিলিয়ন ডলার মূল্যের ফ্ল্যাট কিনেন তিনি।

ফাহিম হাই স্কুলে পড়ার সময় ‘উইজ টিন’ নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে বেশ অর্থ আয় করে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিলেন।

২০১৫ সালে আরও দুই জনের সঙ্গে মিলে ঢাকায় মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহনের অ্যাপ ‘পাঠাও’ চালু করেন। ২০১৭ সালে তিনি অংশিদারিত্ব বিক্রি করে দেন।

এরপর ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে নাইজেরিয়াতে একই ব্যবসা ‘গোকাডা’ চালু করেন ফাহিম। এই ব্যবসাও ব্যপক সাড়া জাগায়।

সর্বশেষ ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালিতে একটি নতুন কোম্পানি চালু করেন।

ফাহিম বিল গেটস হতে পারতেন, জুকারবার্গ হতে পারতেন, অথচ খন্ড খন্ড লাশ হয়ে গেলেন।

এইটা এক প্রফেশনাল মার্ডারারের কাজ পুলিশ জানাইতেছেন। নিউইয়র্কের মত জায়গায় উচ্চবিত্ত এপার্টমেন্ট হাউজে মার্ডার করে ফেলা কোন সহজ ব্যপার না।

ফাহিম সালেহর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন।

– হেদাতুন হীরা

পোস্ট লিংক https://www.facebook.com/groups/EngineersDiaryFamily/permalink/3056234881112899/

ডেইলি মেইল এর বিস্তারিত প্রতিবেদন