সিলেট ও কুড়িগ্রামের পাশে BHETI’র একঝাঁক তরুণ বস্ত্র প্রকৌশলী

ক্যাম্পাস থেকে ঈদের ছুটি ঘোষণা হওয়ার  পর শিক্ষার্থীরা যখন বাড়ির পথে ছুটছে তখনও  ক্যাম্পাসের “শিকড়” টিম ঈদ উপহার নিয়ে পৌঁছে যায় সিলেটের সুনামগঞ্জ উপজেলায়।

উল্লেখ্য যে এর আগেও ২৭জুন কুড়িগ্রামে ৩৩০ টি পরিবারের মাঝে  সহায়তা ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে।

ক্যাম্পাসের সবার থেকে নির্দিষ্ট অর্থ ধার্য করার পরও হচ্ছেনা। এত অল্প অর্থ নিয়ে কিভাবে আমরা ঐ ক্ষুধার্ত মানুষ গুলোর সামনে গিয়ে দাঁড়াবো?

নয়-ছয় না ভেবেই সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস রেখে এক ঝাঁক মেধাবী শিক্ষার্থী নেমে পড়লেন রাস্তায়,একটু সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্যে।

তাদেরই কোন মা-বোন,কোন ভাই,না খেয়ে কোন মতে দিন কাটাচ্ছে ঐ বন্যা কবলিত এলাকায়। তাদের এই বিপদে পাশে দাঁড়াতে না পারলে যে, নিজেকে ক্ষমা করা যাবেনা!

বেলা-অবেলায়, দিন-রাতে, খেয়ে না-খেয়ে পথে-প্রান্তরে,ঘুরে ঘুরে একটু সহযোগিতার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষে একটি মানবিক “ক্যাম্পেইন” চালায়।

শিকড় নামের এই সংগঠন উদ্যোমী,আত্নবিশ্বাসী,বুদ্ধিদীপ্ত এই সংগঠনের সদস্যরা “সফলও হয়”

শিকড় একটি আত্মমানবতার সেবায় নিয়োজিত সংগঠন “বাংলাদেশ তাঁত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট” (বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান)বি.এসসি ইন টেক্সটাইল  ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ছাত্র-ছাত্রী দ্বারা পরিচালিত।

বন্যার্ত অসহায় ও দুর্যোগ কবলিত মানুষের মাঝে, অত্র প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট ও বিভিন্ন ডোনেশনে আদায়কৃত নগদ অর্থ প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।

প্রথম ধাপে ২৭ জুন কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্যাকবলিত অঞ্চল গুলোতে ৩৩০ টি পরিবারে মাঝে খাবার সহ ২০টি নিত্য প্রয়োজনীয় আইটেমের প্যাকেট বিতরণ করা হয়।এতে সহায়তা করেন “রৌমারী-থানার” পুলিশ প্রশাসন।

দ্বিতীয় ধাপে ৫ জুলাই সিলেটের সুনামগঞ্জে ১০০ এর অধিক পরিবারের মাঝে “খামে বন্ধি” ঈদ উপহার পৌঁছে দেয়া হয়।এতে সহায়তা করেন “সুনামগঞ্জ-থানার”পুলিশ প্রশাসন।

জাতির শ্রেষ্ঠ মেধাবীরা যদি মানবিক না হয়, তাহলে এদেশের যেকোনো জাতীয় দূর্যোগ অথবা দেশের ইমারজেন্সি মুহুর্তে এগিয়ে আসার মতো আগামীতে কোন প্রজন্ম বেঁচে থাকবেনা। আগামী ৫-১০বছরের ভিতর আজকের এই মেধাবীরাই নেতৃত্ব দেবে দেশ।

আমাদের উচ্চতর ডিগ্রি দিয়ে কি হবে? যদি আমরা মানবিক না হই? যদি আমরা এদেশের দুঃসময়ে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে না পারি?

আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে যেমন আমাদের মা-বাবা, পরিবার, শিক্ষক পাড়া-প্রতিবেশী তেমনি তাকিয়ে আছে এদেশের সুবিধা বঞ্চিত মানুষগুলো। আমাদের শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি, উচ্চতর ডিগ্রি নেয়ার পাশাপাশি, আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা এদেশ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে, দেশের ক্লান্তিলঘ্নে এই দেশ আমাদের থেকে অনেক প্রত্যাশা রাখে।

আপনার ডিগ্রি, আপনার অর্থ-সম্পদ,আপনার ভোগ বিলাস, একান্তই ব্যাক্তিগত উন্নয়ন,এগুলো সবই ব্যাক্তিগত। যদি সঠিক ব্যাবহার না করা হয় একটা সময় এগুলো সবই মূল্যহীন।

এগুলো বেঁচে থাকে মানবিকতার মাঝে,এগুলো বেঁচে থাকে অসহায় মানুষের মুখে হাঁসি ফোটানোর মাধ্যমে, মানব কল্যাণে যা কিছুই করা হয় তার শেষ নেই, যা স্মরন করা হয় হাজার বছর ধরে, যখন কিনা আপনার-আমার অস্তিত্বই থাকবেনা পৃথিবীতে।

মোঃ হাসিব উল হাসান
বাংলাদেশ তাঁত শিক্ষা ও
প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট (নরসিংদী)

You cannot copy content of this page