আওয়ামী আমলে দেশ সবচেয়ে বেশী সাম্প্রদায়িক হয়েছে

আমিনুল ইসলাম
আমিনুল ইসলাম

দয়া করে দেশে সকল ভাস্কর্য ভেঙে ফেলুন।

আমাদের বাবা-চাচা’রা এইসব দেখার জন্য এই দেশ স্বাধীন করেনি। আপনাদের কাছে হাত জোর করে বলছি- দেশে থাকা সকল ভাস্কর্য ভেঙে ফেলুন।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তো ভাঙা হলো। এইবার দয়া করে বাদ বাকী ভাস্কর্য গুলোও ভেঙে ফেলুন। শুরু করুন জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য দিয়ে।

দেশের নানান স্থানে আছে এই ভাস্কর্য। কেন এই ভাস্কর্য গুলো এখনও ভাঙা হলো না, সেটাই বুঝতে পারছি না।

এরপর দেশের সকল হুজুর সম্প্রদায়কে বলুন নিজেদের ঘরে থাকা বিছানা-বালিস, হাড়ি-পাতিল এবং বদনা’তে থাকা ছবি সমতে জিনিস গুলো ফেলে দিতে।

এরপর দেশে থাকা হিন্দু মালাউনদের ভারতে তাড়িয়ে দিন।

এইতো হয়ে গেল। এটাই তো চাইছেন আপনারা?

দয়া করে দ্রুত করে ফেলুন।

এই দেশ’ই আমাদের। এমন দেশেই আমরা বাস করি।

এখানে আমার মতো পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়া মানুষ; যে কিনা এমনকি কোন দিন যদি ভুল করে নামাজ না পড়ে রাতে বিছানায় গেলে; কিছু একটা করিনি বলে ঘুম আসে না; তাকেও এইসব বলার জন্য শুনতে হয় নানান সব কথা!

যেই আমি সুইডেনের নাগরিকত্ব নেইনি। এরপর যখন মনে হয়েছিলো ভুল করেছি; নিয়েছিলাম ডেনমার্কের গ্রীনকার্ড। নিয়ে সেটাও প্রত্যাহার করেছি নিজেই।

যেই আমি আজ অবদি কোন দেশের নাগরিকত্ব নেইনি; স্রেফ এটা ভেবে- আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবেই গর্বিত। ঠিক যেমন ছিল আমার পিতা-মাতা। সেই আমাকেও শুনতে হয়- আপনি তো বিদেশে থাকেন। আপনি দেশ প্রেমিক না!

দয়া করে দেশে থাকা সকল ভাস্কর্য ভেঙে ফেলুন। বঙ্গবন্ধু আমাদের হৃদয়ে আছে হৃদয়ে’ই থাকুক।

আমরা রাজনীতি করি না। কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও যুক্ত নই। কোন পদ-পদবী দিলেও কোন দিন নিতে যাবো না।

আজ একটা সত্য কথা বলি- আওয়ামী আমলে দেশ যতটা সাম্প্রদায়িক হয়েছে; স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সেটা আর হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।

দেশে এক দশক আগেও আমরা জীবনেও কল্পনা করিনি এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হবে; সেই দেশে আজ এই সব’ই বাস্তব।

আর এর জন্য আর কোন দল নয়- একমাত্র বর্তমান সরকার আওয়ামীলীগ’ই দায়ী।

ব্যাখ্যা চান? শুধু একটা ব্যাখ্যা দেই।

এই যে সাম্প্রদায়িক সব মন্তব্য নানান সব হুজুর করে বেড়ান। তারা কি এইসব এই দেশের মন্ত্রী-এমপিদের পারমিশন ছাড়া করে বেড়াচ্ছেন?

আপনি কিছু একটা বলে দেখুন; সুন্দরবন কিংবা বান্দরবনে থাকলেও পুলিশ এসে আপনাকে খুঁজে বের করবে।

নেতারা এইসব ওয়াজ থেকে লাখ লাখ থাকা আয় করে। হ্যাঁ, ঠিক’ই পড়ছেন। টাকার জন্য এরা করতে পারে না এমন কিছু নেই। একেকটা ওয়াজের জন্য কি পরিমাণ টাকা চাঁদা উঠে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখুন। হুজুর’রা এর খুব সামান্য পরিমাণ’ই পায়।

বাদ বাকী পায় এলাকার নেতারা। আমি বলছি না ওয়াজ খারাপ। আমি বলছি যেই সব ওয়াজে সাম্প্রদায়িক কথা বার্তা হয়; সেইসব ওয়াজের কথা।

আর আমি-আপনি ভাবছি- আহা, দেশ গেল গেল!

হিসাব সোজা- যদি কাউকে দায়ী করতে হয়, তাহলে সরকার এবং আওয়ামীলীগ’কে দায়ী করুন। ওভার এন্ড আউট।

লেখকঃ আমিনুল ইসলাম

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক,

এস্তেনিয়া