বউ ছেড়ে গেছে দুই মাস আগে, শরীর তো বোঝেনা স্যার- ছাত্র ধর্ষণে অভিযুক্ত শিক্ষক

ছাত্রকে বলাৎকার, মাদ্রাসা শিক্ষককে পুলিশে সোপর্দ

“বউ ছেড়ে গেছে দুই মাস আগে, শরীর তো বোঝেনা স্যার!”

নিজের ছাত্র বলাৎকারের এই ছিল তার যুক্তি!
কোন বিচার-বিশ্লেষণে আসলে যেতে ইচ্ছা করছেনা। শুধু ভাবছি ওই বাবা-মা’র কথা, যারা অন্ধ বিশ্বাস আর আস্থায় নিজের সন্তানকে ওই শিক্ষক রূপী পশুর হাতে তুলে দিয়ে এসেছিল।

ভাবছি ওই বাচ্চাটার কথা, যে পরম শ্রদ্ধায় তাকে হুজুর ডেকে সন্মানের সর্বোচ্চ যায়গাটাতে উঠিয়ে রেখেছিল। এতোটুক একটা ছেলে কী মানসিক ট্রমার ভিতর দিয়ে যাচ্ছে সেটা অবর্ণনীয়।

আরো ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে, ছেলেটার বাবা-মা আগিয়ে না আসলে কেউ জানতেও পারতোনা ঘটনাটা।

সূত্রঃ সিরাজগঞ্জে ছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষক আটক

ঘটনা কালকের। মাদ্রাসার আবাসিক সব ছাত্ররা পাশের পুকুরের দিকে গেলে শিক্ষক কৌশলে ভিক্টিম ছাত্রটাকে ডেকে নেয়, বলে গায়ে তেল মালিশ করে দিতে। মাত্র ক্লাস থ্রিতে পড়া ছাত্রের বুঝার উপায় ছিলনা কিছুক্ষণ পরেই তার সাথে কী ঘটতে চলেছে।

রাত্রে সে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেই পাশের এক বাড়িতে। সেখান থেকে রাত্রেই আবার তাকে মাদ্রাসায় নিয়ে আসা হয়।

সকাল হলে আবার অসুস্থ শরীর নিয়েই পালিয়ে যায় কয়েক কিলোমিটার দূরে নিজের বাড়িতে। সেখানে বাবা-মা সব জেনে ছুটে আসে মাদ্রাসাতে। এরপরই মূলত জানাজানি হয় পুরো ঘটনা।

ভাবতেও কষ্ট হয় এতোটুক একটা ছেলে, এইরকম অসুস্থ শরীর নিয়ে হেটে-দৌড়িয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে মায়ের কোলে যেয়ে আশ্রয় নিয়েছে নিজেরই শিক্ষকের হাতে এমন ভয়াবহতার শিকার হয়ে!

শিক্ষকের সাথে কথা বলে ওর ভিতরটা বুঝার চেষ্টা করছিলাম। তার যুক্তি খুব পরিষ্কার। “বিয়ে হয়েছে ৬-৭ মাস আগে। দুই মাস আগে থেকে বউ বাপের বাড়িতে। রক্ত-মাংসের শরীর স্যার, বোঝেনই তো!”

বাচ্চা ছেলেটা সুস্থ হোক দ্রুত। দ্রুত কাটিয়ে উঠুক মানসিক ট্রমা। মনেপ্রাণে দোয়া করি আর কেউ যেন এই পাশবিকতার শিকার না হয়।

লেখকঃ  মাহফুজ হোসেন,

এ এস পি, উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ এর স্ট্যাটাস থেকে

আরো পড়ুন :