গান গজল আর ফেসবুকে ছবি শেয়ার করে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে চাওয়ারাই মুসলিমদের প্রকৃত শত্রু

পাথর ছুঁড়ে ফিলিস্তিনি তরুণরা লড়ছে ইসরায়েলি সৈন্যদের বিরুদ্ধে

মুসলিমরা যে-হারে আহাজারি ও দোয়া করে, সে-হারে যদি তারা বিজ্ঞানে বিনিয়োগ করতো, তাহলে ফিলিস্তিনের এ দুর্দশা আমাদের দেখতে হতো না। বন্দুকের সামনে বাঁশের লাঠি নিয়ে দাঁড়ানো কোনো বীরত্ব নয়, এটি বোকামি।

আল্লাহ বোকাদের কখনো সাহায্য করেছেন, এরকম প্রমাণ ইতিহাসে পাওয়া যায় না। পারমাণবিক বোমার যুগে যে সালাউদ্দিন আইয়ুবীর ঘোড়া কোনো কাজে দেবে না, এটি সবার আগে বুঝতে হবে।

ইন্টেলিজেন্স কামিউনিটির এসেসমেন্ট হলো, ইসরায়েলের হাতে অন্তত আশিটি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড রয়েছে। তবে কৌশলগত কারণে ইসরায়েল এটি কখনো স্বীকার করে না। এটিকে জুজুর ভয় ভাবারও কোনো কারণ নেই। সিরিয়ান এবং ইরানিয়ান ইন্টেলিজেন্সও একই রকম এসেসমেন্ট করেছে। সুতরাং, মুসলিমদের ধরে নিতে হবে যে, ইসরায়েলের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র আছে।

এই মুহুর্তে মসজিদুল আকসা দখল করার চিন্তা মাথা থেকে বাদ দিতে হবে। এটি ইসরায়েলে আছে, এবং আরও অনেক দিন ইসরায়েলেই থাকবে, এ বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। মেনে নিয়ে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

শুধু বিনিয়োগ বাড়ালে চলবে না, মানুষকে স্বাধীনভাবে বিজ্ঞানচর্চা করতে দিতে হবে। ইসলামসম্মতভাবে বিজ্ঞানচর্চা, এই আজগুবি ধারণা থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে। ইবনে সিনা, আবু রুশদ, যাদের নিয়ে মুসলিমরা এখন গর্ব করে, তাঁদের কিন্তু জীবদ্দশায় অনেকটা পালিয়ে বেড়াতে হয়েছিলো।

গোঁড়া মুসলিমরা তাঁদের শান্তিতে থাকতে দেয় নি। যদি প্রভাবশালী কয়েকজন খলিফার আনুকূল্য তাঁরা না পেতেন, তাহলে তাদেরও গলা কাটা হতো। মুসলিমদের এ মানসিকতা এখনও আছে। এ মানসিকতা যতোদিন থাকবে, ইসরায়েল তাদের চেয়ে এগিয়েই থাকবে।

আর ইসরায়েলের সাথে কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপন করলে অসুবিধাটা কোথায়? আমেরিকা ও রাশিয়ার সাথে তো ইসরায়েলের কোনো গুণগত পার্থক্য নেই। আমেরিকা-রাশিয়ার সাথে যদি কোলাকুলি করা যায়, তাহলে ইসরায়েলের সাথেও করা যাবে বলে মনে করি।

এতে একটি লাভ হবে। মসজিদুল আকসা দখলের প্রয়োজনীয়তা আর থাকবে না। মসজিদুল আকসায় বিশ্বের সকল মুসলিম যেতে পারবে, এই শর্তে ইসরায়েলের সাথে কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপন করার কথা ভেবে দেখা উচিত।

যারা গান গজল গেয়ে আর ফেসবুকে ছবি শেয়ার করে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে চান, তারাই মুসলিমদের প্রকৃত শত্রু। এরাই মুসলিমদের অগ্রযাত্রা থামিয়ে রেখেছে। আমরাই সেরা, আমরাই শ্রেষ্ঠ, এরকম আত্মপ্রসাদ এ পাগলদের মোহাবিষ্ট করে রেখেছে। এ আত্মপ্রসাদের ডিমটি আগে ভাঙতে হবে, এবং খতিয়ে দেখতে হবে তারা পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চল থেকে কী কী ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে।

এ পিছিয়ে পড়া থেকে সামনে এগুনোর একটাই পথ। সেটি হলো আল্লাহকে কম বিরক্ত করা। আল্লাহ মগজ দিয়ে দিয়েছেন, এটিকে সবার আগে কাজে লাগাতে হবে। ইহুদি নাসারা নাস্তিক মালাউন এসব গালাগালি বাদ দিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে বুকে ধারণ করতে হবে। কিন্তু তার আগে বুকে গজানো গোবরের জঙ্গলটিও পরিষ্কার করতে হবে।

—মহিউদ্দিন মোহাম্মদ