জেরুজালেম সংকটের সমাধান কী?

ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে পাথর ছুঁড়ে ফিলিস্তিনিদের লড়াই

১)
তিন আব্রাহামিক ধর্মের আদি ধর্ম হল ইহুদি ধর্ম। ইহুদি ধর্মের সংস্কারপন্থীরা পরবর্তীতে খ্রিস্টান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে (নবী ইসা নিজেই ছিলেন ইহুদি)। অন্যদিকে আব্রাহামিক ধর্মকে ভিত্তি করেই ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসার।

দুই হাজার বছর ধরে ইহুদিদের ঘাড়ে দুই ধর্মের লোকেরা দুটো অপরাধ চাপিয়ে দিয়েছে। নবী ইসার ক্রুশবিদ্ধের জন্যে ইহুদিদের দায়ী, অন্যদিকে নবী মুহাম্মদের সাথে যুদ্ধ, তাঁকে নবী হিসেবে না মানা। এই কারণে দুই ধর্মের অনুসারীরা ইহুদিদের যে খুব ভাল চোখে দেখত তা না।

ইহুদিরা কয়েক’শ বছর জেরুজালেম শাসন করলেও এক সময় তা হাত ছাড়া হয়ে যায়। এরপর সময় গড়ালে রোমান, খ্রিস্টান, মুসলিমরা এই অঞ্চল শাসন করে। অন্যদিকে জীবনের তাগিদে ইহুদিরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়।

২)
হিটলার হঠাৎ করে যে ইউরোপে ইহুদি ঘৃণা আমদানি করেছে বিষয়টা তা না। “এন্টি সেমিটিজম” পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন ঘৃণা। ইউরোপে ইহুদিদের প্রতি যে ঘৃণা তা ঐতিহাসিক। শুধু জার্মানি কিংবা নাৎসিরা নয় রাশিয়ানরাও ইহুদিদের প্রচণ্ড ঘৃণা করতো/করে।

অতীতে রাশিয়া সমাজতান্ত্রিক দেশ হলেও ইহুদিদের প্রতি ছিল বিশুদ্ধ ঘৃণা। খ্রিস্টান প্রধান দেশগুলোতে বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন ডাইমেনশনে ইহুদিদের প্রতি ঘৃণার চর্চা করা হতো। কারণ নবী ইসার ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার কারণ ছিল তৎকালীন ইহুদি সমাজ, যদিও নবী ইসা সবাইকে ক্ষমা করে যান।

অতীতে সুইডেনের বড় বড় সিটিতে ইহুদিরা কখনো জায়গা কিনতে পারতো না। বাক-স্বাধীনতার জন্যে আমরা যার নাম সবচেয়ে বেশি উচ্চারণ করি সেই ফ্রান্সের বিখ্যাত ভলতেয়ার নিজেও ছিলেন ইহুদি বিদ্বেষী। ইহুদিদের পোশাক, সংস্কৃতিকে অন্যদের মতন তিনিও নোংরা বলতেন।

মধ্যযুগে ইউরোপের ইহুদিদের উপর অনেক অত্যাচার হয়েছে তা হিটলারের অত্যাচার থেকে কম নয়। মধ্যযুগের অনেক লেখকের লেখায় ইহুদিদের পক্ষে তেমন লোক লেখা খুঁজে পাওয়া কষ্ট হবে। রাজ্জাক স্যারে কথাটা বলতে হয়- “তবে এই কাজটা করেছিলেন উইলিয়াম শেকসপিয়র! তিনি তার নাটকের সংলাপে চরিত্র শাইলকের মুখ দিয়ে আদালতে বলিয়েছেন;-“এ জ্যু’স ব্লা ইজ অলসো রেড।“

এক কলমের একটা টানে তামাম ইহুদিরে মনুষ্যসমাজের অংশ বইল্যা প্রমাণ করলেন, চিন্তা কইর‍্যা দেখেন কী অসম্ভব ব্যাপার। অঘটনঘটনপটিয়সী প্রতিভা বইলাই শেকসপীয়রের পক্ষে ওইটা সম্ভব অইছিল।

১৩ শতকে ইউরোপের ব্ল্যাক ডেথের যে মহামারি হয়েছিল তার জন্যেও ইহুদিদের দোষারোপ করে তাদের উপর আক্রমণ করা হয়েছিল। নির্বোধ মানুষজন ইঁদুর না মেরে ইহুদি মেরে ব্ল্যাক ডেথ থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজছিল!

হিটলারের নেতৃত্বে নাৎসিরা এই গণহত্যার পরিকল্পনা শুরু করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক এক বছর আগে অর্থাৎ১৯৩৮ সালে। হিটলারের সরকার ছিল ইউরোপে বসবাসরত সকল ইহুদিদের নিশ্চিহ্ন করতে প্রতিশ্রুততিবন্ধ। হলোকাস্টের পূর্বে প্রায় ৯ মিলিয়ন ইহুদি ইউরোপের ২০টি দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবাস করে আসছিল। এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেখা গেল তাদের দুই-তৃতীয়াংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে!

হিটলার ভয়, ঘৃণা, মিথ্যা মিশিয়ে বক্তৃতা দিতেন এবং ভবিষ্যৎ উন্নত অর্থনীতির স্বপ্ন ও প্রতিজ্ঞার মাধ্যমে জনগণকে প্রভাবিত করতে থাকে। শুধু তাই নয় হিটলার তার পক্ষে জনসমর্থনের জন্যে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা এমনকি যে কোন বিরোধী পক্ষকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করার জন্যে জনগণকে উস্কানি দিতেন।

নাৎসিবাদের বিরুদ্ধে যে মৃদুভাবেও কোন প্রতিবাদ-সমাবেশ না হয় তার জন্যে হিটলার সরকার মানুষের বাক-স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের স্বাধীনতা, এমনকি মানুষের গণ-জমায়েতের অধিকারও হরণ করে নেয়। হিটলার জনসমর্থন বাড়ানোর জন্যে ইহুদি বিরোধী বক্তব্য দিতে শুরু করেন।

এন্টি-সেমিটিজম, ইহুদি বিরোধী মনোভাব সবসময় হিটলারের দর্শন হিসেবে কাজ করেছে, তাই তো জনগণকে হিটলার বুঝাতে থাকেন যে; গ্রেট জার্মানি নির্মাণের প্রধান বাধা হচ্ছে ইহুদিরা। হিটলার মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন যে; প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয় ও অর্থনৈতিক ধ্বংসের মূল কারণ ছিল ইহুদিদের বিশ্বাসঘাতকতা।

“অথচ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন জার্মানি অবরোধের শিকার হয় এবং তাদের কাঁচামাল শূন্যতা দেখা দেয়। বিশেষ করে সংকট তৈরি হয় বারুদ এবং অন্যান্য বিস্ফোরক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান সল্টপিটারের (Saloetre)। সল্টপিটার প্রধান যোগান ছিল চিলি আর ভারতে, জার্মানির নাগালের বাইরে।

সল্টপিটার বিকল্প রাসায়নিক ছিল অ্যামোনিয়া, কিন্তু তখন অ্যার্মেনিয়ার উপাদান ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল। জার্মানদের জন্যে সুখের খবর এই যে, ১৯০৮ সালে ফ্রিটজ হ্যাবার নামের একজন ইহুদি জার্মান আক্ষরিক অর্থেই বাতাস থেকে অ্যামোনিয়া তৈরির একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেন।

যখন যুদ্ধ শুরু হলো, তখন জার্মানরা হ্যাবারের আবিষ্কারকে কাজে লাগিয়ে বাতাসকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে বাণিজ্যিকভাবে যুদ্ধাস্ত্রের উৎপাদন শুরু করল। অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করেন, হ্যাবারের আবিষ্কার না থাকলে জার্মানি ১৯১৮ সালের অনেক আগেই আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হত।

হ্যাবারের এই আবিষ্কার (যুদ্ধের সময় বিষাক্ত গ্যান উৎপাদনের ক্ষেত্রেও যিনি ছিলেন পুরোধা ব্যক্তিত্ব) তাকে এনে দেয় নোবেল পুরষ্কার। অবশ্য তাকে তাকে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হয়নি, দেয়া হয়েছে রসায়নে।

গাজার ইসলায়েলি সীমান্তে ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে এক কিশোর
গাজার ইসলায়েলি সীমান্তে ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে এক কিশোর

৩)
ইউরোপে খ্রিস্টানদের চাপের মুখে জীবন, নিজেদের জন্যে একটি নিরাপদ দেশের কথা ভেবে কয়েকজন ইহুদি ‘জায়নবাদী” আন্দোলন শুরু করে। জায়নবাদ হল এই ইহুদিরাষ্ট্র সৃষ্টির প্রথম পদক্ষেপ। থিওডোর হের্জল ছিলেন এই আন্দোলনের নেতা। তাকে ইসরাইল রাষ্ট্রের জনক বলা হয়। মজার বিষয় হল- ইহুদি বা ইহুদীদের যে ধর্মরাজ্য এই ইসরাইল, সেই রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা থিওডোর হের্জল ছিলেন একজন নাস্তিক।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগ থেকে জায়নবাদীরা প্যালেস্টাইনে নিজেদের দেশ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করে। জেরুজালেমে আগে থেকেই ইহুদি, খ্রিস্টান, মুসলিমরা সংখ্যায় কম-বেশি বসবাস করতো। কারণ তিন ধর্মের মানুষই বিশ্বাস করে এখানেই শেষ বিচারের দিনে মানুষের পুনরুত্থান হবে, বিচার বসবে। জায়নবাদীরা ফান্ড কালেক্ট করে ঐ অঞ্চলে কিছু জায়গা জমি সেখানে কিনে নেয়। কিছু কিনার সাথে সাথে স্থানীয়দের কাছ থেকে জমিও কেড়ে নিতে থাকে।

জমি দখলের জন্যে তারা জঙ্গি দলও গঠন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর সকল প্রান্ত থেকে ইহুদিদের প্যালেস্টাইন-ইসরাইলে আসা শুরু করে। অন্যদিকে ইউরোপও চাইছে তাদের ঘাড় থেকে ইহুদিদের ফেলে দিতে।

আজ ঈদের নামাজের পর আল আকসা মসজিদের সাথে ছবি তুলছেন ফিলিস্তিনি নারী। ছবি- রয়টার্স

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইহুদি নিধনের সাথে প্যালেস্টাইনের জনগণের কোন সম্পর্ক নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্যালেস্টাইনের এক মুফতি হিটলারের সাথে সাক্ষাৎ করে ইহুদিদের হত্যায় সমর্থন জানায়।

এই কারণে কয়েক বছর আগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গণহত্যায় নাৎসিদের দোষারোপ না করে তার জন্যে পরোক্ষভাবে মুসলিমদের দায়ী করে। এই নেতানিয়াহু হলেন ইসরাইলের ডানপন্থী নেতা। ৯০ দশকে যখন ইয়াসির আরাফাত আর আইজাক রবিন যখন দুই দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন।

এর প্রতিবাদে তখন ডানপন্থী নেতানিয়াহুরা রবিনের বিরুদ্ধে কফিন মিছিল করে। এরপর ডানপন্থীদের হাতেই তিনি খুন হোন। (ইয়াসিন আরাফাতকেও হত্যা করা হয়)

পৃথিবীতে সেলটার কলোনিয়ালিজম রাষ্ট্র কিন্তু শুধু ইসরাইলই নয়। সেলটার কলোনিয়ালিজম রাষ্ট্রের ভাল উদাহরণ হচ্ছে-যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়া। আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের সাদা মানুষেরা সেখানে গিয়ে সেটেল হয়েছে এবং সেখানকার স্থানীয় অধিবাসীদের তারা উৎখাত করেছে।

৪)
ইসরাইল রাষ্ট্র এখন এক বাস্তবতা। পৃথিবীর প্রায় দুইশ দেশগুলোর মধ্যে যে পাঁচটি দেশ প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে এগিয়ে তাদের মধ্যে ইসরাইল একটা। অতীতে না মানলেও এখন অনেকে দুই রাষ্ট্রের বিষয়ে পজিটিভ। কিন্তু ইসরাইলের ডানপন্থীরা যেমন নেতানিয়াহুরা ঘোষণাই করেছেন তারা কখনো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে দেবে না।

অন্যদিকে আরেক অংশ ইসরাইলকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়াই একমাত্র পথ মনে করেন। ফাঁক তালে ফিলিস্তিনের জনগণের অবস্থা হল এশিয়ার রোহিঙ্গাদের মতন। গত কয়েক বছরে নেতানিয়াহু যতবার রাজনৈতিক সংকটে পড়েছেন ততবারই জেরুজালেমে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাড়িয়ে দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক পত্রিকা থেকে শুরু করে ইসরাইলের পত্রিকাগুলো একই কথা বলছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে, তার পার্টি সরকার গঠন করার জন্য উল্লেখযোগ্য আসন না পেলেই ইসরাইল ফিলিস্তিন দাঙ্গা হাঙ্গামা শুরু করে ডানপন্থী ইহুদিদের কাছে টানতে চান।

শান্তির দাবিতে ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনি নারীদের যৌথ মিছিল
শান্তির দাবিতে ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনি নারীদের যৌথ মিছিল

এখানে আরেকটা কথা বলে রাখা ভাল, অর্থোডক্স ইহুদিরা জায়নবাদী রাষ্ট্রের পক্ষ না। এমনকি ইউরোপ-আমেরিকার অনেক শিক্ষিত ইহুদি ইসরাইল রাষ্ট্রকে সমর্থন দেয় না। কিন্তু এগুলো আসলে জায়নবাদীরা পাত্তা দেয় না।

৫)
গত সপ্তাহে সংঘাত শুরু করে ইসরাইলের পুলিশ। পরবর্তীতে দাঙ্গা হাঙ্গামা ছড়িয়ে যায়। প্যালেস্টিনিয়ানদের পক্ষে এখন হামাস যুদ্ধ করে। গত কয়েক দিনে হামাস ১০৫০ (ইসরাইলের কথা) গুলো রকেট ছোড়ে। হামাস রকেট ছুড়লে ইসরাইলের তেমন কোন ক্ষতি হয় না, শুধু আর্থিক ক্ষতি ছাড়া। কারণ রকেটকে আকাশেই ধ্বংস করার প্রযুক্তি ইসরাইলের আছে।

তাই ৯০% রকেটই তারা আকাশে ধ্বংস করতে পারে। অন্যদিকে ইসরাইলের রকেট বা বিমান হামলা সামাল দেওয়ার মতন ক্ষমতা প্যালেস্টিনিয়ানদের নাই। ফলে তাদের তাদের ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যু-সংখ্যা বেশি। মানে একটা যুদ্ধে দুই দলের ক্ষমতার ভারসাম্য ১৯-২০ হলেও এখানে ২-২০।

দুই রাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ সমাধান যতো আগে হতে পারতো প্যালেস্টিনিয়ানদের জন্য ততো ভাল হতো। কারণ প্রতিদিনই প্যালেস্টিনিয়ানদের ভূমি ইসরাইলের পেটের ভেতর চলে যাচ্ছে। প্যালেস্টাইনে যে শুধু মুসলিম থাকে তা না। ওখানকার খ্রিস্টানদের জমিও ইসরাইলের পেটে চলে গেছে। পশ্চিমা বিশ্বে অনেক বিখ্যাত মানুষ আছেন যারা ফিলিস্তিনের খ্রিস্টান।

ম্যাপে ইসরায়েল, পশ্চিম তীর এবং গাজার অবস্থান
ম্যাপে ইসরায়েল, পশ্চিম তীর এবং গাজার অবস্থান

প্যালেস্টিনিয়ানরা যুদ্ধ করতো নিজের দেশের জন্যে যদিও আমাদের দেশের মতন অনেকেই এটাকে ধর্মযুদ্ধ হিসেবে মনে করতো। ড. আব্দুল্লাহ আযযাম ওসামা বিন লাদেনের একজন শিক্ষক এবং পরামর্শদাতা ছিলেন এবং বিন লাদেনকে আফগানিস্তানে এসে জিহাদে সহায়তা করার জন্য রাজি করেছিলেন । যুদ্ধ শেষ হওয়ার সাথে সাথে তারা দুজনেই আল-কায়েদা প্রতিষ্ঠা করে।

তিনি লস্কর-ই-তৈয়বার সহ-প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন। আব্দুল্লাহ দেড় বছরের জন্য ফিলিস্তিনদের সাথে যুদ্ধ করতে যান। গিয়ে দেখে ফিলিস্তিনরা কার্ড খেলে, গান শোনে, সিনেমা দেখে। বেচারা এগুলো দেখে হতাশ হয়। তাদের এসব বাদ দিয়ে শুধু দ্বীনের পথে থাকার পরামর্শ দেন।

কিন্তু তারা এসব শুনত না, বরং তাকে বাঁধা দিত। তো, একদিন তিনি এক সৈন্যকে ডেকে জিজ্ঞেস করেন ফিলিস্তিনের এই অভ্যুত্থানের সাথে দ্বীনের কোন সম্পর্ক আছে কিনা? তখন সেই সৈন্য স্পষ্ট ভাষায় বলেন তাদের এই অভ্যুত্থানের সাথে পশ্চাতে দ্বীনের কোন সম্পর্ক নেই। বেচারার মন ভেঙ্গে যায় পরে তিনি ফিলিস্তিন ত্যাগ করে সৌদি আরবে চলে আসেন।

জেরুজালেম

৬)
ইসরাইল আন্তর্জাতিকভাবে অনেক শর্ত ভাঙছে। এই জেরুজালেমে শুধু মুসলিমদের যে যেতে হয় তা না, খ্রিস্টানদেরও যেতে হয়। কিন্তু ইসরাইল এটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই সমগ্র জেরুজালেমকে কোন এক দেশের কব্জায় না দেওয়াই একমাত্র সমাধান। না হলে এমন হানাহানি চলতেই থাকবে।