১৮ বছরের কম বয়সীদের ভ্যাকসিন লাগবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

জাহিদ মালেক

১৮ বছরের কম বয়সীদের কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বয়স ২৫ বছরের নিচে। আর ১৮ বছরের নিচে ৪০ শতাংশ মানুষ। এই মুহূর্তে এদের ভ্যাকসিনের দরকার নেই।

তিনি বলেন, ‘আমাদের জনসংখ্যার ২০ শতাংশ বা প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন পাবেন। তবে যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে তাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না।

পৃথিবীর কোথাও এই বয়সীদের ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে না। এমনকি তাদের ট্রায়ালেও রাখা হয়নি।’

এছাড়া গর্ভবতী নারী ও কিছু অন্য জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না।

রোববার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিতে ভ্যাকসিন ল্যাব পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ মুহূর্তে প্রায় এক কোটি লোক দেশের বাইরে থাকছে। সে হিসেবে প্রথমে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষের ভ্যাকসিন প্রয়োজন হবে না। তবে পর্যায়ক্রমে সবাইকে এর আওতায় আনা হবে। প্রথম ধাপে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনের তিন কোটি ভ্যাকসিন ধাপে ধাপে দিতে ছয় মাস লাগবে।

পরবর্তীসময়ে আমরা কোভ্যাক্সের ভ্যাকসিন পাবো। সেটাও একবারে দেবে না। ধাপে ধাপে আসবে। এ সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে এক বছরের বেশি সময় লাগবে।

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার নতুন ধরন দেখা দিয়েছে। সেটা বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা এয়ারপোর্টে বলে দিয়েছি যারা ইউরোপ থেকে আসবে তাদের আলাদা লাইনের মাধ্যমে বের করতে।

পাশাপাশি যারা করোনার সার্টিফিকেট না নিয়ে আসবে তাদের তিনদিনের পরিবর্তে সাতদিনের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জাহিদ মালেক বলেন, প্রথম ধাপে স্বাস্থ্যকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যসহ ষাটোর্ধ্বদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

আমাদের দেশে নয় ধরনের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। করোনার ভ্যাকসিন এলে মোট ১০ ধরনের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে প্রয়োগ করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ফ্রিজিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে জেলা হাসপাতালগুলোতে। পরিবহনের জন্য কোল্ড বক্স কেনার প্রক্রিয়া চলছে।

বাংলাদেশের ওষুধ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব তৈরি হয়েছে। গত মার্চ মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এর স্বীকৃতি দিয়েছে। এতে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, ‘ওষুধ ও ভ্যাকসিনের জন্য আমরা আপাতত দুটি ল্যাব ঠিক করেছি। যার মধ্যে ওষুধের ল্যাবটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুমোদিত। ফলে ওষুধের ল্যাব আন্তর্জাতিক মানের।

এই ল্যাবে আমাদের ওষুধ কোম্পানিগুলোর ওষুধের মান পরীক্ষা করা হয় এবং মান বজায় রাখতে যা করণীয় তা করা হয়। আগামীতে এই ল্যাবে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিনও পরীক্ষা করা হবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমানসহ ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরির কর্মকর্তারা।