বয়স স্বল্পতার কারণে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত অসংখ্য শিক্ষার্থী, উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা

স্কুল বিদ্যালয় ক্লাসরুম শিক্ষার্থী

বয়স স্বল্পতার কারণে এ বছর ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু অনেক শিক্ষার্থীই বঞ্চিত হতে যাচ্ছে। অনলাইন আবেদনে বয়স ১১+ না হওয়ায় এমন সমস্যায় পড়েছেন তারা। আর এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকগণও।

সন্তানকে নিয়ে ছুটছেন জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিসের দুয়ারে দুয়ারে।

এদিকে সোমবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করেন ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগণ।

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ শিক্ষাবর্ষে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থী।

করোনা পরিস্থিতির কারণে সব শিক্ষার্থীকেই পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত বলে বিবেচনা করা হয়েছে এবং তাদেরকে প্রত্যয়নপত্র ও প্রদান করা হয়েছে।

শহরের উত্তর গোপালগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বীণাপাণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মালেকা একাডেমী ও এস এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খবর নিয়ে জানা গেছে, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু অধিকাংশ শিক্ষার্থীই একই সমস্যায় পড়েছে।

এদের অধিকাংশেরই বয়স ১১+ না হওয়ার কারণে অনলাইনে আবেদন গৃহীত হয়নি।

এতে অনেক শিক্ষার্থীর লেখাপড়ায় ধারাবাহিকতা ব্যাহত হতে পারে, যা তার পরবর্তী জীবনেও প্রভাব ফেলতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সন্তানদের ভর্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন তাদের অভিভাবকেরা।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) দেশের সকল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনলাইন ও এসএমএস -এর মাধ্যমে ভর্তির আবেদন ও ফি প্রদান সংক্রান্ত নিয়মাবলী প্রকাশ করেছে।

সে অনুযায়ী গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হয়। কিন্তু আবেদনে ন্যূনতম বয়সসীমা ১১+ নির্ধারিত থাকায় বয়স স্বল্পতার কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরই আবেদন গৃহীত হয়নি।

এদিকে আবেদনের সময়সীমা শেষ হবে চলতি মাসের ২৭ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ৩০ ডিসেম্বর অনলাইন লটারীর মাধ্যমে জানা যাবে কে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবে।

গোপালগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খায়রুল আনাম মো. আফতাবুর রহমান হেলালী বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ (সংশোধিত ২০১৯) অনুযায়ী ১ম শ্রেণিতে ভর্তির ন্যুনতম বয়স হতে হবে ৬+ বছর এবং সে অনুযায়ী ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর বয়স হতে হবে ন্যুনতম ১১+ বছর।

বয়স স্বল্পতার কারণে এ বছর অনেকে ভর্তির সুযোগ হতে বঞ্চিত হচ্ছে জেনে তিনি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইতোমধ্যেই যোগাযোগ করেছেন।

কিন্তু কর্তৃপক্ষ সরকারি পরিপত্রের কোন ব্যত্যয় হওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

করোনা ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এবারের মত বয়সের নিয়মনীতি কিছুটা শিথিল করবেন, এমটাই প্রত্যাশা করে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলকে অনুরোধ জানিয়েছেন অভিভাবকগণ।

পরে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ ইলিয়াছুর রহমানের নিকট চলমান সমস্যা নিরসনে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে বলে জানা গেছে।