ফল পরিবর্তনে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা করতো সে

বোর্ড পরীক্ষায় ফল পরিবর্তন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেয়ায় প্রলোভন দেখান চাঁদপুরের রাফসান চৌধুরী। ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের। ১০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত নেন কাজ করার জন্য।

এছাড়া ওই সময়ে পরিচয়ের সুযোগ নিয়ে অনেক তরুণীকে প্রেমে ফাঁসিয়ে ব্ল্যাকমেইল করেন প্রতারক রাফসান। গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, এ পর্যন্ত অন্তত ৫০ তরুণীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে রাফসান।

২০২০ সালে এইচএসসি পাস করেন বিথি (ছদ্মনাম)। বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল তাকে মেডিকেলে ভর্তি করার। ফেসবুকে রাফসানের বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করেন ব্যাংক কর্মকর্তা বাবা ও স্কুল শিক্ষক মা। পরে বিথির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করেন রাফসান।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী জানান, আমার একটা গ্রুপ ছিলো। সেটাতে পোস্ট করেছিলাম পরে সে ওখানে আমাকে নক দেয় এবং ভিডিও কলে কথা হয়। এরপর আমাকে ভর্তির কথা বলে একটা বিকাশ নম্বর দেয় এবং টাকা পাঠাতে বলে।

পরে প্রতারিত হয়ে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে যান অভিভাবক। আবেদন জানান ব্যবস্থা নেয়ার। ২ মাস ধরে তদন্ত করে খোঁজ মেলে রাফসানের। গ্রেপ্তার করা হয় দক্ষিণ গোড়ান থেকে।

রাফসানের বাড়ি চাঁদপুর। ২০০৮ সালে এসএসসি ফেল করেন। এরপর পড়ালেখায় না এগিয়ে, শুরু করেন প্রতারণা। ২০১৬ সাল থেকে নামে-বেনামে ৮-১০টি ফেসবুক গ্রুপ খোলেন। ৩টি ফেসবুক অ্যাকউন্ট থেকে মেডিকেল-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব বোর্ড পরীক্ষার ফল পরিবর্তনের বিজ্ঞাপন দেন।

গোয়েন্দারা বলছেন, অনেক শিক্ষিত অভিভাবকও রাফসানের ফাঁদে পা দিয়েছেন। ৫ বছরে ৩ বার গ্রেপ্তার হয়েছে সে। অন্তত ৫০ তরুণীকে ফাঁসিয়েছে সে।

এবিষয়ে ডিএমপি গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস, ফল পরিবর্তন করা ছাড়াও মাদব ক্রয় বিক্রয়ের সঙ্গেও রাফসান জড়িত। আর এসবের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্যতম বিষয় হলো সে তরুণীদের আপত্তিজনক ছবি ফাঁসের কথা বলে ব্ল্যাকমেইল করে।

এ ধরণের প্রতারণা থেকে বাঁচতে নিজেদের সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই বলে মনে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।