দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদের বৈধতা সংক্রান্ত ভুয়া চিঠি, মন্ত্রণালয়ের প্রতিবাদ

দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়

দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯টি ক্যাম্পাসের সব শিক্ষার্থীর সনদের বৈধতা নিয়ে সম্প্রতি একটি ভুয়া চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া চিঠির সূত্র ধরে একটি শিক্ষা বিষয়ক অনলাইন পোর্টাল সংবাদ প্রকাশ করে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বলছে, পত্রটি ভুয়া। প্রকাশিত সংবাদটি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

সোমবার (১ মার্চ) স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবাদ লিপি মঙ্গলবার (২ মার্চ) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দারুল ইহসানের সনদধারীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বছরের পর বছর দেরি করায় প্রায় ২ হাজার বেসরকারি শিক্ষককে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, মূল সনদ না পাওয়ায় হাজার হাজার বৈধ সনদধারীর ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারে। এই পরিস্থিতিতে মধ্যেই নানা বিভ্রান্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের জারি করা দেখানো একটি ভুয়া চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

মন্ত্রণালয়ের প্রতিবাদ লিপিতে জানানো হয়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দৈনিক শিক্ষা নামের একটি পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে বলা হয়, সনদ বিক্রিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে আদালতের আদেশে বন্ধ করে দেওয়া দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়টির ২৯টি ক্যাম্পাসের সব শিক্ষার্থীর সনদের বৈধতা দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের মূল সনদ ইস্যু করতে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের তালিকা প্রস্তাব করতে বলা হয়।

মন্ত্রণালয়ের প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, উপ-সচিব শামিমা বেগম নামে ভুয়া স্বাক্ষরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১ শাখার ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখের ৩৭.০০.০০০০.০৭৮.৩১.০০১.১৯.৩৪ নম্বর ভুয়া স্মারক দেখিয়ে একটি জাল পত্র জারি দেখানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে ২৯টি ক্যাম্পাসের সব শিক্ষার্থীর সনদের বৈধতা দেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের মূল সনদ ইস্যু কার্যক্রম কিংবা সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ে গৃহীত হয়নি এবং এ বিষয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১ শাখা থেকে কোনও পত্র জারি করা হয়নি।’

প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের মিথ্য ও প্রতারণামূলক সংবাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ‘দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক মাহমুদ আহমেদের অনুকূলে বৈধ ২৯টি ক্যাম্পাসের সকল শিক্ষার্থীদের সনদের বৈধতা প্রদানের সম্মতি দেয়া গেল এবং একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের মূল সনদ ইস্যু কার্যক্রম পরিচালনা পর্ষদের তিন জনের তালিকা প্রস্তাব প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো’ বক্তব্যে যে আদেশটি গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, সেটি ভুয়া।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এরকম কোনো আদেশ জারি করা হয়নি এবং ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়নি। এই ভুয়া আদেশের প্রেক্ষিতে কেউ যেন কোনো রকমের অনৈতিক সুবিধা না নিতে পারে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন থাকতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত হলো, মামলা সংক্রান্ত কারণে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত একটি আদেশ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছিল।

সকল বিষয় বিবেচনা করে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদের বৈধতা দেয়া সংক্রান্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।