জামিন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়েছেন ডা. আকাশের স্ত্রী

ডা আকাশ

চট্টগ্রামের আলোচিত ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলায় সাত মাস কারাভোগের পর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান তার স্ত্রী ডা. তানজিলা হক চৌধুরী মিতু।

২০১৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর কারামুক্ত হওয়ার পর কেবল একবার মামলার শুনানিতে হাজির হন তিনি। এরপর থেকে লাপাত্তা মিতু একে একে ছয় দফায় মামলার শুনানিতে হাজির হননি। নিয়মিত হাজিরায় অনুপস্থিত থাকায় তাকে ব্যাখ্যা দিতে প্রথমে শোকজ করেন আদালত।

এতেও মিতু কোনো জবাব না দেওয়ায় গত ৩১ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পারোয়ানা জারি করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জামিন পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে থাকা নিজের বাবা-মায়ের কাছে চলে গেছেন মিতু।

এ মামলায় ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মিতু, তার বাবা আনিসুল হক চৌধুরী, মা মোছাম্মৎ শামীমা শেলী, বোন সানজিলা হক চৌধুরী এবং মিতুর কথিত বন্ধু ডা. মাহবুবুল আলমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ।

এজাহার দায়েরের পর থেকে মিতু ছাড়া বাকি চার আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ক্রোকি পরোয়ানাও জারি করেন আদালত।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ওয়াহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আলোচিত মামলাটির প্রধান আসামি ডা. মিতু আদালতের শুনানিতে দফায় দফায় অনুপস্থিত। আর অন্য

আসামিদের বিরুদ্ধে জারি হওয়া ক্রোকি পরোয়ানা তামিলের জন্য রয়েছে তাদের গ্রামের ঠিকানা কুতুবদিয়া থানায়। তা এখনও ফেরত আসেনি।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, মিতুসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিট বিচারিক কার্যক্রমের জন্য রয়েছে।

মিতু অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে শোকজ ও পরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়। আসামিরা পলাতক থাকায় পেপার নোটিফিকেশনের জন্য মামলার বিচার শুরু হতে দেরি হচ্ছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবীরা জানান, মিতুর পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করে। মিতুও সেখানে উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছিলেন। জামিন পাওয়ার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্র চলে যাওয়ায় এখন মামলার শুনানিতে অনুপস্থিত থাকছেন। বিষয়টি আদালতের নজরেও আনা হয়েছে।

২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি ভোরে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার নিজ বাসায় শরীরে ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যা করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশ।

মৃত্যুর আগে তিনি ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে প্যাটেল, মাহবুবসহ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে স্ত্রী মিতুর অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ আনেন এবং তার আত্মহত্যার জন্য স্ত্রী দায়ী বলে উল্লেখ করেন।

এ ঘটনায় আকাশের স্ত্রীসহ ছয়জনকে আসামি করে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে চান্দগাঁও থানায় তার মা জোবাইদা খানম মামলা করেন।