একজন ডাঃ জেসি হক হয়ে উঠার গল্প

জেসি হক
তরুণদের জন্য লেখাটি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে-

ইংল্যান্ডের এমআরসিপি (মেম্বারশিপ অব দ্য রয়েল কলেজস অব ফিজিশিয়ান্স অব দ্য ইউনাইটেড কিংডম) পরীক্ষায় এবার তাক লাগিয়েছেন বাংলাদেশের এক তরুণ চিকিৎসক।

সারা বিশ্বের চিকিৎসকদের মর্যাদাকর এ পরীক্ষা ১ হাজার নাম্বারের। পাস মার্ক ৪৫৪ নাম্বার। সেখানে ৯০৬ নাম্বার পেয়ে সারা বিশ্বের সব প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে প্রথম হয়েছেন বাংলাদেশি এক চিকিৎসক।

ডা. জেসি হক। বর্তমানে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলা হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত এ চিকিৎসককে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসার বন্যা বইছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, নিকট অতীতে সারা পৃথিবীতে ৯০০ নাম্বারের বেশি পাওয়াটা দুর্লভ।

ঢাকার কেরাণীগঞ্জের আমিরাবাগ এলাকার এ মেধাবী শিক্ষার্থী ঢাকা কলেজ থেকে ২০০৭ সালে এইচএসসি পাস করে প্রথমে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটে ভর্তি হন।

মেধাক্রম ৫৬তম হয়ে থ্রিপল-ইতে সুযোগ পান জেসি হক। সেখানেও তিনি কৃতিত্বের পরিচয় দেন, ৫ বিষয়ের পরীক্ষায় ৪টিতেই তিনি এ প্লাস (সিজিপিএ ৪.০০) পেয়েছিলেন।

কিন্তু যান্ত্রিক পড়াশোনায় সেখানে তার মন বেশিদিন টেকেনি। মাত্র ৮মাস ছিলেন বুয়েটে। পরে তিনি মানুষের শরীর নিয়ে কৌতুহলী হন।

এক পর্যায়ে তিনি মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। মাত্র দুই মাসের প্রস্তুতিতে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় সারা দেশের মেধা তালিকায় ২৯তম হন জেসি হক।

পরে দেশের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত বিদ্যাপীঠ ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজেই তিনি ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করে দেশবরেণ্য মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আজিজুল কাহহারের চেম্বারে তার অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে যোগ দেন।

সেখান থেকেই মূলত মেডিসিনের প্রতি তার বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়। ২০১৯ সালের মে মাসে তিনি এমআরসিপি পার্ট-১ পরীক্ষায় অংশ নেন। এরই মাঝে তিনি ৩৯তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরায় মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগ দেন।

পাঠ্যবইয়ের বাইরেও এ পর্যন্ত মেডিকেল রিলেটেড প্রচুর বই পড়েছেন ডা. জেসি হক। তার বাসায় অন্তত ৮ লাখ টাকার বই রয়েছে। তিনি প্রথম দিকে রাজধানীর নিউমার্কেটের একটি দোকান থেকে বই এনে এনে পড়তেন।

পরশ পাবলিশার্স নামের ওই দোকানের মালিক একজন চিকিৎসকের বইয়ের এত খোঁজাখুঁজি দেখে মুগ্ধ হন। জেসি হকের যখন যা ভালো লাগতো তাই তিনি ওই দোকান থেকে নিয়ে আসতেন। পরে তার বাবা এসে তা পরিশোধ করে দিতেন।

ডা. জেসি হক বলেন, এ পর্যন্ত মেডিকেল রিলেটেড অনেক বই পড়েছি। এখন পরবর্তীতে ইংল্যান্ডে চিকিৎসাবিদ্যায় উচ্চতর ট্রেনিং করতে চাই।

সেখানে দক্ষতা অর্জন করে দেশে ফিরে সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।