আইন অমান্য করে হল খুলতে পারবো না : শাবি উপাচার্য

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল পরীক্ষার আগে হল খুলে দিতে হবে। আমরা তাদের দাবি মেনে নিয়েছি। পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগে হল খুলে দেব। যখন হল খুলতে পারবো পরীক্ষা নেব। সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকবো। আমরা জোর করে হল খুলতে পারবো না। এটা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। সরকারের আইন অমান্য করতে পারবো না। সরকারের নিয়ম মানতে হবে।’

শিক্ষার্থীদের হল খুলে দেয়ার আল্টিমেটামের প্রেক্ষিতে সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) আলাপকালে উপাচার্য এসব কথা বলেন।

শিক্ষার্থীদের সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের বাইরে না। এটা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। সরকারের নিয়ম-নীতি শতভাগ মানতে বাধ্য। সরকারের নির্দেশনা ছাড়া বাংলাদেশের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ই হল খুলে দিতে পারবে না।’

শিক্ষার্থীদের আবাসিক সমস্যার বিষয়টি উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অসুবিধার বিষয়টি আমরা স্বীকার করি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবসময় শিক্ষার্থীবান্ধব। আমরা সবসময় তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করে আসছি। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি অনলাইন ক্লাসগুলো চালু রাখার জন্য। তাতে অনেকেই বাধা দিয়েছে। অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে ক্লাসগুলো নিয়েছি। এখন অনার্স ও মাস্টার্সের পরীক্ষা নিচ্ছি। বৈশ্বিক মহামারি কেউ ডেকে নিয়ে আসে নাই। এটা আমাদের নিজেদের সৃষ্টি না। আল্লাহর তরফ থেকে আসছে। সবাই এর সঙ্গে মানিয়ে চলছি। তারা যদি মনে করে হল খুলে দেব, এটা আমরা পারব না।’

তিনি বলেন, ‘এখানে গায়ের জোরে হলে প্রবেশ করা যাবে না। নিজের হাতে আইন তুলে নিতে পারবে না। এটা একটা সুশৃঙ্খল বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা-গবেষণায় ভালো অবস্থানে আছে। একের পর এক সুনাম অর্জন করছে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধশীলরা এসব করতে পারে না।’

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কিছু গ্রুপের ইন্ধন আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখানে কিছু গ্রুপের ইন্ধন আছে। সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অস্থিতিশীল করার জন্য একটা গ্রুপ কাজ করছে। এরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে গেছে। সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য কাজ করছে। তারা কোনো না কোনো অজুহাতে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে চায়। একবার বলে পরীক্ষার আগে হল খুলে দিতে হবে, এখন বলে আমরা মানি না এর মানে কী? তাদের অন্য উদ্দেশ্য আছে।’

শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখনকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কেউ যেন নিজের হাতে আইন তুলে না নেয়। কেউ যদি নিজের স্বার্থে বা করো উস্কানিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্ত করার চেষ্টা করে এটা কারো জন্য সুখকর হবে না।’

উপাচার্য বলেন, ‘সরকার মনে করে একটা গোষ্ঠী সরকারকে অশান্ত করার জন্য কোনো না কোন অজুহাতে কাজ করছে। এই ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য সরকার অনুরোধ করছে, আমাদেরকে আহ্বান জানিয়েছে, আমরাও সবাইকে অনুরোধ করছি। কিছু শক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে অশান্ত করতে চায়। ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য সকলের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।’

এর আগে গত শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) হল খুলে দেয়ার দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এরই প্রেক্ষিতে পরীক্ষা শুরুর সাতদিন আগে আবাসিক হলগুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত না মেনে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল খুলে দিতে আল্টিমেটাম দিয়েছেন। আল্টিমেটাম দিয়ে শিক্ষার্থীরা ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেছেন।