রাবি ক্যাম্পাসে ‘শয়তান তাড়াতে’ প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ

রাবি ক্যাম্পাসে ‘শয়তান তাড়াতে’ প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ

‘যা শয়তান দূর হয়ে যা, রাবি ক্যাম্পাস থেকে চলে যা, যা শয়তান যা রাবি ক্যাম্পাস থেকে দূর হয়ে যা’ এই বাক্য বলতে বলতে পাথর নিক্ষেপের কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

হাজিদের মতো হঠাৎ এমন পাথর নিক্ষেপের কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ‘শয়তান’ তাড়াতে এমন অভিনব পন্থা বেছে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (৭ মে) জুমার নামাজের পর থেকে ‘শয়তান_মুক্ত_রাবি’ এই হ্যাশট্যাগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এমন বেশকিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করেছেন মোল্লা সাঈদ নামের এক শিক্ষার্থী। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যসহ অন্যান্য প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন শেষে অনেকেই নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতাসহ বিভিন্ন নৈতিক স্খলনের অভিযোগ নিয়ে বিদায় নিয়েছেন। কিন্তু তারা এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছেন। সেই জায়গা থেকে আমাদের মনে হয়েছে শয়তানের প্ররোচনায় তারা এ ধরনের অপকর্ম তাৎক্ষণিকভাবে করে আবার ভুলে যান।

তিনি আরও বলেন, ‘তাই বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্ররোচণাকারী শয়তানকে তাড়িয়ে শিক্ষাঙ্গনটি অনিয়ম, লুটতরাজের হাত থেকে রক্ষা করা জরুরি মনে হয়েছে আমাদের। পাশাপাশি শিক্ষা ও গবেষণার সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য আমরা আকুল আবেদন জানিয়েছি এবং পরবর্তীতে যারা দায়িত্বে আসবেন তাদের জন্যও অন্যায়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের কঠোর বার্তা দেয়া।’

কর্মসূচিতে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী নুরুল হক নুরু বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করি। রাবির সদ্য বিদায়ী উপাচার্য আব্দুস সোবহান আপাদমস্তক একজন দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি তা প্রমাণ করে দিয়ে গেছেন তার শেষ কর্মদিবসে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জওহরলাল নেহরু বলেছিলেন একটি দেশ ভালো হয় যদি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভালো হয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি থেকে মুক্ত রাখতে এ প্রতীকী প্রতিবাদ পালন করা হয়।’

এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘মূলত এই কর্মসূচি পালন হয়েছে ‘নিখিল বঙ্গ বিয়ে খাওয়া কমিটি’ নিব্বিখাক’র ব্যানারে। সামাজিক, রাষ্ট্রীয় অনিয়ম, অসঙ্গতি নিয়ে কথা বলতে চায় বলে দাবি আয়োজকদের। বর্তমানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনও যখন বিভিন্ন দুর্নীতি, অনিয়ম, অপকর্ম নিয়ে কথা বলছে সেখানে অভিযুক্তদের কোনো টনকই নড়ছে না।

সে সব অভিযোগ এবং বিরুদ্ধে কর্মসূচিকেও তাচ্ছিল্য করে পুনরায় আবার অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। সেই জায়গা থেকে অভিযুক্তের নৈতিক এবং মানসিক দীনতার দরিদ্র অবস্থা তুলে ধরে এবং পরিহাস, রম্য করে প্রতিবাদ জানাতে আমাদের সংগঠনের নাম এমন হয়েছে।’