সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের জরুরি নির্দেশনা দিলেন সমন্বয়ক

৭ কলেজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাতটি কলেজে অধ্যায়নরত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ও জরুরি নির্দেশনা প্রদান করেছেন কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এবং অধিভুক্ত সাত কলেজের সমন্বয়ক (ফোকাল পয়েন্ট) অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) রাত ১১টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে এই নির্দেশনা তুলে ধরেন। তিনি স্ট্যাটাসে লিখেছেন-

‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি ৭ কলেজের অনার্স/মাস্টার্স শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ জরুরি নির্দেশনা-

অনেক জটিলতা থাকলেও আমরা পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ পরীক্ষা নেয়া প্রায়ই নিয়মে এনেছিলাম। তবে ফলাফল বিপর্যয় পীড়াদায়ক ছিল। তার কারণ ব্যাখ্যায় যাব না। পরীক্ষার্থীদের পাশাপাশি আমাদের অতিউৎসাহী কেউ কেউ এ জন্য দায়ী। এটা মানতে হবে, ফেল করা শিক্ষার্থীকে পাস করানোর দায়িত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেবে না। সুযোগও নেই। এখনো সতর্ক না হলে একসময় বিনাসনদে বিরাট সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করতে হবে।

আবার যারা নিয়মিতভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ৭ কলেজে ভর্তি হয়েছিল, তাদের তাদের ক্লাস, পরীক্ষা পূর্বনির্ধারিত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শতভাগ সফলভাবে চলছিল। কিন্তু করোনা আমাদের সব লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয় সারাবিশ্ব।

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে করোনার শুরু হতে সারাদেশের মতো ঢাকার সরকারি ৭ কলেজ অনলাইনে ক্লাস নেয়ার কার্যক্রম শুরু করে। শিক্ষক ছাড়াও শিক্ষার্থীদের কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল, এখনো আছে মানতে হবে। তবে শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাব ছিল না। তাই সিলেবাস শেষ করতে আমরা অনেকটা সফল।

বিভিন্ন বর্ষে সিলেবাস প্রায় শেষ। বিজ্ঞানের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের বিষয়টি আমার কাছে বোধগম্য নয়। মাস্টার্স চূড়ান্ত, ডিগ্রি স্পেশালসহ ২/৩টি পরীক্ষা মাঝপথে আটকে আছে। সরকারি নির্দেশনা ও ক্লিয়ারেন্স যখনই পাওয়া যাবে, স্বল্প সময়ের নোটিশে ও গ্যাপে সকল পরীক্ষা শুরু হবে এবং দ্রুত ফল প্রকাশে আমরা সচেষ্ট থাকব।

এর বাইরে অন্যান্য বর্ষের পরীক্ষা নেয়ার জন্য পরীক্ষা কমিটি গঠন, প্রশ্ন প্রণয়ন, রুটিন তৈটি, ফরম ফিলাপ সবকিছুর প্রস্তুতি নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ৭ কলেজের পক্ষে পরামর্শ দিয়েছি। তারা কাজ শুরু করেছে। মনে রাখতে হবে, সময় খুব বেশি সময় দেয়া যাবে না বা পরীক্ষায় বেশি গ্যাপও দেয়া যাবে না।

কারণ করোনায় অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। চাকরির বাজারে বেশ হাহাকার। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের ভালো সামর্থ্যের কারণে দ্রুত তাদের শিক্ষার্থীদের চাকরি বাজারে প্রবেশের সুযোগ করে দেবে। পিছিয়ে যাবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজে পড়ুয়া প্রান্তিক লেভেলের শিক্ষার্থীরা। তাই আমরা সতর্ক।

এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ঢাকার সরকারি ৭ কলেজের প্রায় ২ লক্ষ শিক্ষার্থীর বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও সতর্ক হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিনীত অনুরোধ করছি।

আর শিক্ষার্থীদের প্রতি, ফেল করাদের পাস করানোর দায়িত্ব কেউ নেবে না। যেহেতু করোনাকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে নিজেদের অনেক অনেক দায়িত্বশীল হতে হবে। পড়ে পাস করতে হবে।’’

প্রসঙ্গত, অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ দিন ধরে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে তার শারীরিক অবস্থা বেশ জটিল হলেও বর্তমানে অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ার পথে রয়েছে বলে জানা গেছে।