ঢাবিতে কয়েক পরিবারের ৫০ এরও বেশী সদস্য করোনা আক্রান্ত

ঢাবি আবাসিক এলাকা DU

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২৫ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক কেএম গোলাম রব্বানী৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের পরিবারের দুই সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।

এছাড়াও উপাচার্যের অফিসের এক কর্মকর্তার পরিবার সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট, দপ্তরের অন্তত ২০টি পরিবারের পঞ্চাশেরও অধিক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

গত এক সপ্তাহে হঠাৎ করোনার এমন প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দপ্তরের এক কর্মকর্তা তার পরিবার সহ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের পরিবারের দুই সদস্য করোনায় আক্রান্ত হলেও তিনি এখনো পর্যন্ত সুস্থ আছেন।

এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষক করোনায় আক্রান্ত হয়ে পুরো পরিবার সহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি ছিলেন দীর্ঘদিন।

তবে এখন কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। এর বাইরে যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দুজন শিক্ষক এ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে কর্মরত পরিবহন ম্যানেজার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের সহকারী রেজিস্ট্রার সহ প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, গত এক সপ্তাহ হঠাৎ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার করোনা আক্রান্তের হার বেড়েছে। এর জন্য আমরা সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।

এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মাস্ক ছাড়া প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষেধ এবং প্রশাসন নো মাস্ক-নো সার্ভিস রুলস কঠোরভাবে ফলো করছে। এর বাইরে অপ্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থানকে নিরুৎসাহিত করছে।

উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬ হাজার ২৭৫ জন।

এছাড়া করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে আরও ২ হাজার ১১১ জনের দেহে। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলো ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৭৯৫ জন করোনা রোগী।

এ দিন সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৯৩ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭৮৮ জন।

এর আগে মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) দেশে আরও ২ হাজার ২১২ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে মারা যান আরও ৩৯ জন।

এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বুধবার বিকেল পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ১৫৩ জনের এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ১৩০ জন।

এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৬০ হাজার ৩৭৬ জন।

বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে, ২ লাখ ৫৪ হাজার ২৫৫ জন।

বিশ্বে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যাও এই দেশটিতে। বিশ্বের ক্ষমতাধর এ দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ১৬ লাখ ৯৫ হাজার ৭১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় এবং মৃতের সংখ্যায় তৃতীয় অবস্থানে আছে ভারত।

দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮৯ লাখ ১২ হাজার ৭০৪ জন। এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক লাখ ৩১ হাজার ৩১ জন।

করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় তৃতীয় এবং মৃতের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ব্রাজিল। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯ লাখ ১১ হাজার ৭৫৮ জন।

এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক লাখ ৬৬ হাজার ৭৪৩ জন।
করোনায় মৃতের সংখ্যার দিক থেকে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে মেক্সিকো।

দেশটিতে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯৯ হাজার ২৬ জন। আর এ পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ১০ লাখ ১১ হাজার ১৫৩ জন।

আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ অবস্থানে উঠে এসেছে ফ্রান্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২০ লাখ ৩৬ হাজার ৭৫৫ জন। আর মৃতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ২৭৩ জন।

সুস্থতার দিক থেকে প্রথম অবস্থানে আছে ভারত (৮৩ লাখ ৩৩ হাজার ১৩ জন), দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র (৭০ লাখ ৮৭ হাজার ৭৯৬ জন) এবং তৃতীয় অবস্থানে আছে ব্রাজিল (৫৩ লাখ ৬১ হাজার ৫৯২ জন)।

গত বছরের ১৭ নভেম্বর প্রথম করোনা সনাক্ত হয়।

ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৯টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।