সিজিপিএ ২.৭৬ থেকে Google জয়!

"সিজিপিএ ২.৭৬ থেকে Google জয়!" আক্কাস উদ্দীন জিসান। বর্তমানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত আছেন জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন কোম্পানি গুগলে। পড়াশোনা করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় - চুয়েট এর মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। একাডেমিক রেজাল্ট উল্লেখযোগ্য না হলেও তিনি এখন বিশ্বের খ্যাতনামা একটি প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার। কেমন ছিল তার স্বপ্নের গুগল জয়ের গল্পটা? ছোটবেলাতেই প্রোগ্রামিং এর হাতেখড়ি হয় জিসানের। কলেজ পর্যন্ত পড়াশোনা করেন ওমানে। এরপর বাংলাদেশে এসে ভর্তি হন চুয়েটে। প্রোগ্রামিংয়ের নেশাটা ভার্সিটিতেই ডালপালা মেলতে শুরু করে। ক্লাস মিস গেলেও ভার্সিটির আয়োজিত প্রোগ্রামিং কনটেস্টগুলো মিস হতোনা কখনোই। চুয়েট থেকে পাস করেন মাত্র সিজিপিএ ২.৭৬ নিয়ে। কিন্তু স্বপ্ন যার বহুদূর, লক্ষ্য যার অটুট, তাকে দমিয়ে রাখা অসম্ভব। গ্র‍্যাজুয়েশন শেষে অন ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্টে যোগ দেন Samsung Bangladesh এ। দুবছর পর আরেকটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে যোগ দেন। সেখানে পাচমাস কাজ করার পর মাস্টার্সের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান আমেরিকায়। নর্থ ডাকোটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স এবং "Autonomous localization of a UAV in a CAD model" এর উপর থিসিস সম্পন্ন করেন। সম্পূর্ণ কম্পিউটার ভিশনের এই রিসার্চটি ছিল মূলত একটি ড্রোনকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো স্থাপনায় স্থাপন, CAD মডেল প্রদান এবং অটোমেশন পদ্ধতিতে লক্ষ্য খুজে বের করা। শিকাগোতে HERE Technologies নামের একটি ম্যাপিং প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্ন করেছেন তিনি।অটোমোবাইলের নেভিগেশন সিস্টেম নিয়ে কাজ করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে ইমেজ এবং আইএমইউ ডাটা থেকে অটোমেটেড জেনারেশন নিয়ে কাজ করেন।এরপর NOD ল্যাবের SLAM টিমের হেড হিসেবেও নিযুক্ত ছিলেন। তিনি হ্যান্ড হেল্ড ডিভাইস ডেভেলপ করেছিলেন, যেটার মাধ্যমে যেকোনো অবজেক্ট এর মুভমেন্ট ট্র‍্যাক করা যেতো রিয়েল টাইমে। সে সময়েই ডাক পান প্রযুক্তি বিশ্বের অন্যতম কোম্পানি গুগল এ। একই সময় শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম Facebook এও কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন অদম্য মেধাবী জিসান। কিন্তু শেষ অবধি ছোটবেলার স্বপ্ন গুগলকেই বেছে নেন তিনি। এত কম সিজিপিএ নিয়েও কিভাবে সুযোগ পেলেন গুগল কিংবা ফেসবুকের মতো জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানে? "কে কোন ডিগ্রি নিয়েছে বা কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছে, এরকম বড় প্লাটফর্মে সেটা কোনো ব্যাপারই নয়। স্কিল আর লজিক ডেভেলপ করাটাই মুখ্য। আমি এমন সহকর্মীর সাথেও আগে কাজ করেছি যে কিনা শুধুমাত্র হাইস্কুল ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারী। অনলাইনে মেশিন লার্নিং কোর্স করেই সে ইঞ্জিনিয়ার পদে এসেছে। সবটাই নির্ভর করে নিজের প্যাশন আর হার্ডওয়ার্কের উপর।" বলছিলেন জিসান। চুয়েট জীবনের প্রত্যেকটা মুহুর্ত তার অন্তরে গেঁথে আছে উল্লেখ করে তিনি আশাপ্রকাশ করেন সামনের দিনগুলিতে আরও অনেক চুয়েটিয়ানের সাথে কাজ করতে পারবেন। টমাস আলভা এডিসন বলতেন,সফল হওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হল প্রতিবার হার মানার আগে আরেকবার চেষ্টা করা। নিজের মেধা আর পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে গেছেন সদাহাস্যজ্বল, নিরহংকার, বিনয়ী এই মানুষটি। তার কৃতিত্ব ও সাফল্য আরও অনেক সুনাম বয়ে আনুক। তাকে অভিনন্দন ও শুভকামনা।

আক্কাস উদ্দীন জিসান। বর্তমানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত আছেন জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন কোম্পানি গুগলে। পড়াশোনা করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় – চুয়েট এর মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে।

একাডেমিক রেজাল্ট উল্লেখযোগ্য না হলেও তিনি এখন বিশ্বের খ্যাতনামা একটি প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার। কেমন ছিল তার স্বপ্নের গুগল জয়ের গল্পটা?

ছোটবেলাতেই প্রোগ্রামিং এর হাতেখড়ি হয় জিসানের। কলেজ পর্যন্ত পড়াশোনা করেন ওমানে। এরপর বাংলাদেশে এসে ভর্তি হন চুয়েটে।

প্রোগ্রামিংয়ের নেশাটা ভার্সিটিতেই ডালপালা মেলতে শুরু করে। ক্লাস মিস গেলেও ভার্সিটির আয়োজিত প্রোগ্রামিং কনটেস্টগুলো মিস হতোনা কখনোই। চুয়েট থেকে পাস করেন মাত্র সিজিপিএ ২.৭৬ নিয়ে।

কিন্তু স্বপ্ন যার বহুদূর, লক্ষ্য যার অটুট, তাকে দমিয়ে রাখা অসম্ভব। গ্র‍্যাজুয়েশন শেষে অন ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্টে যোগ দেন Samsung Bangladesh এ। দুবছর পর আরেকটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে যোগ দেন।

সেখানে পাচমাস কাজ করার পর মাস্টার্সের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান আমেরিকায়। নর্থ ডাকোটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স এবং “Autonomous localization of a UAV in a CAD model” এর উপর থিসিস সম্পন্ন করেন। সম্পূর্ণ কম্পিউটার ভিশনের এই রিসার্চটি ছিল মূলত একটি ড্রোনকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো স্থাপনায় স্থাপন, CAD মডেল প্রদান এবং অটোমেশন পদ্ধতিতে লক্ষ্য খুজে বের করা।

শিকাগোতে HERE Technologies নামের একটি ম্যাপিং প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্ন করেছেন তিনি।অটোমোবাইলের নেভিগেশন সিস্টেম নিয়ে কাজ করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে ইমেজ এবং আইএমইউ ডাটা থেকে অটোমেটেড জেনারেশন নিয়ে কাজ করেন।এরপর NOD ল্যাবের SLAM টিমের হেড হিসেবেও নিযুক্ত ছিলেন।

তিনি হ্যান্ড হেল্ড ডিভাইস ডেভেলপ করেছিলেন, যেটার মাধ্যমে যেকোনো অবজেক্ট এর মুভমেন্ট ট্র‍্যাক করা যেতো রিয়েল টাইমে। সে সময়েই ডাক পান প্রযুক্তি বিশ্বের অন্যতম কোম্পানি গুগল এ।

একই সময় শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম Facebook এও কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন অদম্য মেধাবী জিসান। কিন্তু শেষ অবধি ছোটবেলার স্বপ্ন গুগলকেই বেছে নেন তিনি।

এত কম সিজিপিএ নিয়েও কিভাবে সুযোগ পেলেন গুগল কিংবা ফেসবুকের মতো জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানে?

“কে কোন ডিগ্রি নিয়েছে বা কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছে, এরকম বড় প্লাটফর্মে সেটা কোনো ব্যাপারই নয়।

স্কিল আর লজিক ডেভেলপ করাটাই মুখ্য। আমি এমন সহকর্মীর সাথেও আগে কাজ করেছি যে কিনা শুধুমাত্র হাইস্কুল ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারী। অনলাইনে মেশিন লার্নিং কোর্স করেই সে ইঞ্জিনিয়ার পদে এসেছে। সবটাই নির্ভর করে নিজের প্যাশন আর হার্ডওয়ার্কের উপর।”

বলছিলেন জিসান।

চুয়েট জীবনের প্রত্যেকটা মুহুর্ত তার অন্তরে গেঁথে আছে উল্লেখ করে তিনি আশাপ্রকাশ করেন সামনের দিনগুলিতে আরও অনেক চুয়েটিয়ানের সাথে কাজ করতে পারবেন।

টমাস আলভা এডিসন বলতেন,সফল হওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হল প্রতিবার হার মানার আগে আরেকবার চেষ্টা করা।

নিজের মেধা আর পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে গেছেন সদাহাস্যজ্বল, নিরহংকার, বিনয়ী এই মানুষটি। তার কৃতিত্ব ও সাফল্য আরও অনেক সুনাম বয়ে আনুক। তাকে অভিনন্দন ও শুভকামনা।

সংযুক্তি: আন্তর্জাতিক তিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে চুয়েটের তিন যন্ত্রকৌশলী