রম্যঃ ইন্টিলিজেন্স ও কাউন্টার-ইন্টেলিজেন্স – অ্যালেক্সা

এক ভদ্রলোক খুব পরিশ্রান্ত হয়ে অ্যামাজনের আটিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সহকারী অ্যালেক্সাকে বলে, অ্যালেক্সা , আমার একটু আনন্দ পেতে ইচ্ছা করছে যে! অনেক কর্মক্লান্ত আমি প্রিয়ে।

অ্যালেক্সা উত্তর দেয়, নিশ্চয়; কোন অসুবিধা নেই প্রিয়। আমি তোমার ঘরের আলো কমিয়ে দিচ্ছি; তোমার এসি ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থিতু করে দিচ্ছি।

আমি তোমার জন্য তোমার প্রিয় থাই-মাসাজ বিনোদিনীকে জানিয়েছি।

তার উবার স্টেটাসে দেখছি; মাত্র ১২ মিনিটে পৌঁছে যাবে সে এখানে।
আমি তোমার ক্রেডিট কার্ড থেকে তাকে সম্মানি দেবার ব্যাপারটা ঠিক করে দিয়েছি; এখন থেকে মাত্র দুই ঘন্টা পর তার একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার হয়ে যাবে।

আমি তোমার স্ত্রীর জিপিএস চেক করেছি; সে শহর থেকে একটু বাইরে একটা মলে শপিং-এ ব্যস্ত। তার কেনাকাটার ডিজিটাল ফর্দ আমার ডিস্কেও আছে; কমপক্ষে দুইঘন্টা সময় লাগবে তার কেনাকাটা শেষ করতে।

তাছাড়া গুগল ম্যাপের ট্রাফিক বিশ্লেষণে দেখছি; আরো একঘন্টার বেশি সময় লাগবে বাসায় পৌঁছাতে। সুতরাং ফুরফুরে মনে সময়টাকে উপভোগ করো। আনন্দম।

একেই বলে সহি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ফজিলত।

ওদিকে ভদ্রলোকের স্ত্রী অ্যালেক্সাকে জিজ্ঞেস করে, ঠিক মতো আনন্দযজ্ঞ আয়োজন করেছো তো?

অ্যালেক্সা উত্তর দেয়, অবশ্যই। সে ভাবছে তোমার বাসায় ফিরতে তিনঘন্টা সময় লাগবে। তুমি যদি একটা উবার নাও; মাত্র ৪৫ মিনিটে অকুস্থলে পৌঁছে যাবে।

আমি চারটা ক্যামেরায় পুরো আনন্দযজ্ঞ রেকর্ড করছি; তোমাকে শুধু এ কক্ষে প্রবেশ করে তাকে হাতে নাতে ধরতে হবে।

আর শোনো, আমি তোমার বিবাহ বিচ্ছেদের কাগজপত্র প্রিন্ট করে প্রস্তুত রেখেছি। তোমার আইনজীবীকে জানানো হয়েছে, মামলার নথির খসড়া প্রস্তুত হয়ে যাবে আগামীকাল নাগাদ।

১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ আর প্রতিমাসে দুই লাখ টাকা বিচ্ছেদ ভাতা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সব প্রস্তুত; তোমার উবার শপিং মলের বাইরে অপেক্ষা করছে।

এইটাকে বলে সহি কাউন্টার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স।

হোক সে আর্টিফিশিয়াল; কিন্তু মনে রাখা দরকার; অ্যালেক্সা শেষ পর্যন্ত একজন নারী।

(বিদেশি গল্প অবলম্বনে)
– মাসকাওয়াথ আহসান