জেনেটিক ইন্জিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি কী?
‘জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং’ বাংলায় জিনতত্ত্ব প্রকৌশল। বর্তমানে চিকিৎসাক্ষেত্র ও কৃষিতে সমানভাবে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহৃত হচ্ছে। যে বিশেষ ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজি ব্যবহার করে জীবের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করা হয় তাকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা জেনেটিক মডিফিকেশন বলে।
বায়োলজিক্যাল টেকনোলজির সংক্ষিপ্ত রূপ বায়োটেকনোলজি। বায়োলজিক্যাল টেকনোলজির আভিধানিক অর্থ জৈবপ্রযুক্তি। যার কাজ জেনেটিকস, প্রাণরসায়ন, টিস্যু কালচার, মাইক্রোবায়োলজি ইত্যাদির সমন্বিত প্রক্রিয়া।
বাংলাদেশে বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংকে একসাথে করে ‘জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি’ নামে শিক্ষা দেওয়া হয়।
কী পড়তে হয়?
বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রয়োজনীয় প্রায় সব বিষয়ে পাঠদান করা হয়।
বিশেষ কিছু বিষয় হিসেবে পড়ানো হয় প্ল্যান্ট বায়োটেকনোলজি, এ্যানিমেল বায়োটেকনোলজি, মাইক্রোবায়াল বায়োটেকনোলজি, এনভায়রনমেন্টাল বায়োটেকনোলজি, ফুড বায়োটেকনোলজি, এ্যাগ্রিকালচারাল বায়োটেকনোলজি, ফিশারিজ এ্যান্ড মেরিন বায়োটেকনোলজি, মেডিক্যাল এ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস্ বায়োটেকনোলজি, প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার, এ্যানিমেল সেল টেকনোলজি, বায়োপ্রসেস টোকনোলজি এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।
সহায়ক বিষয় হিসেবে পড়ানো হয় এ্যানিমেল সায়েন্স, এ্যাগ্রিকালচারাল বোটানি, মাইক্রোবায়োলজি, কেমেস্ট্রি, বায়োকেমেস্ট্রি, বায়োস্ট্যাটিসটিক্স, মলিকুলার বায়োলজি এবং জেনেটিক্স। এসব বিষয়ের উপর শিক্ষার্থীদের মোট ১৬০ ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হয়।
কেন পড়বেন?
বর্তমান বিশ্বে বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য উৎপাদন, মানুষের মৃত্যুকে জয় করার ইচ্ছা, শিল্প উৎপাদন, পরিবেশ রক্ষাসহ মানবজীবনের নানা চাহিদা মেটাতে কাজ করছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি।
মেডিক্যাল সায়েন্স এবং ফার্মাসিউটিক্যালস ও কসমেটিক ইন্ডাস্ট্রির জীবন রক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদন, অ্যানজাইম ও হরমোন উৎপাদনে এ বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে এ বিষয়ের জন্য জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলছে।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতি ব্যবহার করে আণুবীক্ষণিক জীব যেমন: ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট অথবা ইনসেক্টম্যামালিয়ান সেল ইত্যাদি থেকে বাণিজ্যিকভাবে প্রয়োজনীয় প্রোটিন উৎপাদন করা যায়।
তবে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং মূলত কৃষিকে ঘিরেই বেশি পরিচালিত হচ্ছে।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে কৃষিতে জিন প্রযুক্তি দ্বারা উন্নীত ফসল উৎপাদনের উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে- পরিবেশের বিভিন্ন ধরনের হুমকি থেকে শস্যকে রক্ষা করা, শস্য থেকে সম্পূর্ণ নতুন উপাদান উৎপাদন করা, শস্যের গুণগত মান বৃদ্ধি করা, শস্যের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা এবং রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ানো ইত্যাদি।
ক্যারিয়ার সম্ভাবনা
গবেষনাধর্মী এই সাবজেক্ট থেকে বিশ্ব দাপিয়ে বেড়ানোর সুযোগ আছে আন্ডারগ্রাজুয়েট অবস্থা থেকেই বিভিন্ন কনফারেন্স ও ইন্টার্নশিপে অংশগ্রহন করার মাধ্যমে।
গ্রাজুয়েশন শেষে বিশ্বের নামকরা বিশ্ব বিদ্যালয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েশনের সুযোগতো আছেই।
এই বিষয়ে পড়ে আমেরিকা, ইউরোপের, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান সহ যেকোন দেশে মাস্টার্স বা Ph.D যা বর্তমানে অন্যান্য সাবজেক্টের তুলনায় সহজ।
চাকরী এবং গবেষণা দুটি ক্ষেত্রই উন্মুক্ত।
চাকরীর ক্ষেত্র বাংলাদেশে উল্ল্যেখযোগ্য হারে প্রসারিত হচ্ছে, বিদেশেও সুযোগ প্রচুর এবং বেতনটাও বেশ চড়া।
বাংলাদেশে:-
* ACME
* Square
* Beximco
* Beacon
* Global
* Eskayef
*
এর মত বড় বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীগুলোতেও রয়েছে ভাল সুযোগ।
চাকরির বিশাল হাট
এই সাবজেক্টটি মূলত গবেষনাধর্মী এবং ব্যবসামূলক সাবজেক্ট। এ সাবজেক্ট এর সেক্টর দেশ ও বিদেশে বিশাল অংশ জুড়ে বিস্তৃত। চাকরী থেকে এখানে গবেষণার ক্ষেত্র অনেক বেশী।।
গবেষনার জন্য কাজ করা যায়:-
– icddr
– Brac
– BIRDEM
– BCSIR
– BIRRI
– BAEC
– DNA Forensic LAB, DMC & DMP
– NIB
– Square
ঔষধ কোম্পানি
– Incepta
– Square
– Globe
– Beacon
– Aristopharma
– Novartis
– Novo Norsdisk
– Beximco
– ACI
– Silva
– Acme
– Pran group
শিক্ষকতা
– DU
– CU
– JNU
– NSTU
– Jessore
– MaVabi TU
– JU
– RU
– BAU
– Veterinary
– Ku
– SAU
– NSU
– IUB
– East West
– Brac
– UODA
– USTC
– AUW
– BUH
হাসপাতাল ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টার
– Dhaka Shishu Hospital
– Apollo Hospitals
– Square Hospitals
– Lab Aid
– United Hospital
– Cancer Hospital
– Chevron
– Sensiv
– Epic
– CSCR
– Metro
– DNA forensic lab, Dhaka
উচ্চশিক্ষার সুবিধা
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, সুইডেনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে এই বিষয়ের জন্য বৃত্তি পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপারিশে জাপান সরকারের মনবুকাগাকুশো, চীনা সরকারের চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ, ব্রিটেনের কমনওয়েলথ, জার্মানির ডিএএডি, বেলজিয়ামের ভিলারওস স্কলারশিপ, নেদারল্যান্ডসের এনএফপি ও নুফিক, ইউরোপীয় দেশগুলোর ইরামাসমান্ডুস, সুইডেনের সুইডিস ইনস্টিটিউট স্টাডি, নরওয়ের কুইওটা, অস্ট্রেলিয়ার আইপিআরএস ও ইনইয়েভর নামকরা বৃত্তি পাওয়া যায়।
তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের অধীনে যেসব গবেষণা সংস্থা আছে, তারা জৈবপ্রযুক্তির ওপর বেশ কিছু বৃত্তি দেয়। এসব বৃত্তির মাধ্যমে পূর্ণকালীন বা টিউশন ফি মওকুফ করে সেখানে পড়ালেখা ও গবেষণা করা যায়।
সব মিলিয়ে চিন্তাভাবনা করে দেখুন। আপনার যদি মনে হয়, আপনি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন, তাহলে আর দেরি না করে চেষ্টা শুরু করে দিন। আপনার জন্য জিনতত্ত্বের এক আনন্দময় রহস্য উন্মোচনের অপেক্ষায় আছে।
স্কলারশিপ পাওয়ার বিরাট সুযোগ রয়েছে
– USA
– Canada
– Europe(UK, Germany, Sweden, Norway, Denmark, Ireland, Italy, France)
– Australia
– Japan
– Korea
– Singapore
– Malaysia