Fisheries – মাৎসবিজ্ঞান

ফিসারিজ কি?

ফিসারিজ বিষয়টিকে বাংলায় মাৎসবিজ্ঞান বলা হয়। সাধারন সবাই শুনলে বুঝি মৎস চাষ নিয়ে পড়ানো ও আরো হরেক রকম অপূর্ন চিন্তাভাবনা। ফিসারিজ হলো এমনটি বিষয় যেখানে মৎসের সকল কিছু পড়ানো হয় ।মৎস ও ইকোনোমিক অবস্থান এবং মানুষের কল্যানে মৎসের ব্যবহার নিয়ে ও কাজ করেন। মৎসের জিনোম তথা জেনেটিক্স পড়ানো হয়। এক কথায় মৎস বিজ্ঞানি যদি হতে চান তাহলে ফিসারিজ পড়তে হবে।।

ফিশারীজ শিক্ষা: কেন?

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রক্রিয়াধীন ব-দ্বীপ আমাদের নদীমাতৃক এই বাংলাদেশ। মৎস্য-সম্পদে ভরপুর অসংখ্য ছোট-বড় নদী-নালা জালের মত ছড়িয়ে আছে এদেশ জুড়ে।

প্রায় ষাট শতাংশ প্রাণীজ আমিষ পাওয়া যায় মৎস্য ও মৎস্য-জাত দ্রব্য থেকে যা অন্যান্য প্রাণীজ আমিষের চেয়ে তুলনামূলক দামে সস্তা ও সহজ-প্রাপ্য। দরিদ্রতা আর জনসংখ্যার আধিক্যের পরিপ্রেক্ষিতে কেবলমাত্র মৎস্য বিজ্ঞানই পারে মৎস্য ও মৎস্য-জাত দ্রব্যের মত প্রাণীজ আমিষের এই সরবরাহ নিশ্চিত করার বিষয়টিকে যথার্থভাবে বাস্তবায়ন করতে।

বাংলাদেশ মৎস্য-সম্পদে ভরপুর দেশসমূহের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু জনসংখ্যার আধিক্যজনিত কারণে বার্ষিক চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণ মৎস্য সম্পদ আহরণ ও উৎপাদন করা এখনও সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তাই এই চাহিদার সাথে উৎপাদনের সম্পর্ক মেলাতে অবশ্যই মৎস্য বিজ্ঞান অধ্যয়ন প্রয়োজন।

বাংলাদেশে মৎস্য-জাত দ্রব্য রপ্তানির মাধ্যমে মৎস্য খাত হতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়ে থাকে। উৎপাদনের উৎস বিবেচনায় নিলে মৎস্য-খাতই হচ্ছে দেশের সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের খাত।

কারণ দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বৃহৎ খাত তৈরি পোশাক শিল্পের সমস্ত কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় যার মাধ্যমে অনেক দেশীয় মুদ্রা খরচের খাতায় চলে যায়।

অপরদিকে মৎস্য সম্পদ উৎপাদন করা হয় প্রায় সম্পূর্ণভাবে দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে। অন্যদিকে চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ ফ্যাক্টরিসমূহে বর্তমানে মোট উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র ২০ শতাংশ ব্যবহৃত হচ্ছে যথেষ্ট পরিমাণ চিংড়ি সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারার কারণে।

তাই চিংড়ির উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ফ্যাক্টরিসমূহের উৎপাদন ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব মৎস্য বিজ্ঞান অধ্যয়নের মাধ্যমে।

এছাড়াও অন্যান্য মৎস্য সম্পদ রপ্তানির কলাকৌশল আয়ত্তের মাধ্যমে বৈদেশিক আয় বৃদ্ধির করণীয় নির্ধারণে মৎস্য বিজ্ঞান অধ্যয়ন নিশ্চিতভাবে ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

প্রায় ১.২৫ কোট মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতের সাথে সম্পৃক্ত যা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ। অন্যদিকে গ্রামীণ জনপদের প্রতি পাঁচজনের চারজনই জলজ সম্পদের উপর প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল।

এদেশে আর কোন খাত পাওয়া যাবে না যার উপর এত বেশি মানুষ নির্ভরশীল।

মৎস্য বিজ্ঞান শিক্ষা মৎস্য সম্পদ তথা মানব সম্পদের যথাযথভাবে ব্যবহারের পথ বাতলে দেয়।
নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবনের জন্য সময় উপযোগী আর প্রয়োজনীয় গবেষণা, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণ মৎস্য বিজ্ঞানে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জনবলের। ।

ফিসারিজ কেনো পড়বেন?

•বাংলাদেশে প্রাণীজ আমিষের প্রায় ষাট শতাংশ পাওয়া যায় মৎস্য ও মৎস্য-জাত দ্রব্য থেকে যা অন্যান্য প্রাণীজ আমিষের চেয়ে তুলনামূলক দামে সস্তা ও সহজ-প্রাপ্য।

দরিদ্রতা আর জনসংখ্যার আধিক্যের পরিপ্রেক্ষিতে কেবলমাত্র মৎস্যবিজ্ঞানই পারে মৎস্য ও মৎস্য-জাত দ্রব্যের মত প্রাণীজ আমিষের এই সরবরাহ নিশ্চিত করার বিষয়টিকে যথার্থভাবে বাস্তবায়ন করতে।

জনসংখ্যার আধিক্যজনিত কারণে বার্ষিক চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণ মৎস্য সম্পদ আহরণ ও উৎপাদন করা এখনও সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তাই এই চাহিদার সাথে উৎপাদনের সম্পর্ক মেলাতে প্রয়োজন আরও গবেষণা, আরও গবেষক।

আর কাঙ্ক্ষিত গবেষক তৈরি করতে পারে মৎস্যবিজ্ঞান।

বাংলাদেশে মৎস্য-জাত দ্রব্য রপ্তানির মাধ্যমে মৎস্য খাত হতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়ে থাকে।

অন্যদিকে চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ ফ্যাক্টরিসমূহে বর্তমানে মোট উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র ২০ শতাংশ ব্যবহৃত হচ্ছে যথেষ্ট পরিমাণ চিংড়ি সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারার কারণে।

তাই চিংড়ির উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ফ্যাক্টরিসমূহের উৎপাদন ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে মৎস্যবিজ্ঞান ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

প্রায় ১.২৫ কোট মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতের সাথে সম্পৃক্ত যা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ। অন্যদিকে গ্রামীণ জনপদের প্রতি পাঁচজনের চারজনই জলজ সম্পদের উপর প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল।

মৎস্য সম্পদ ও তত সংশ্লিষ্ট মানব সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের পথ বাতলে দিতে সক্ষম মৎস্যবিজ্ঞান।

নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবনের জন্য সময় উপযোগী আর প্রয়োজনীয় গবেষণা, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণ মৎস্য বিজ্ঞানে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জনবলের।

বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, দাতা বা উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, ব্যাংক বা অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে ওঠা শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহেও রয়েছে ফিসারিজ সংশ্লিষ্ট কাজের সুযোগ।

ফিসারিজ বিষয়ের অন্তভুক্ত ছয়টি বিভাগ হলো:-

  • ১.অ্যাকুয়াকালচার
  • ২.অ্যাকোয়াটিক রিসোর্চ ম্যানেজম্যান্ট
  • ৩.কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিসারিজ
  • ৪.ফুড টেকনোলজি এন্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল
  • ৫.ফিশ বায়োলজি এন্ড জেনেটিক্স
  • ৬.ফিস হেলথ্ ম্যানেজমেন্ট

বিদেশে স্কলারশীপসহ উচ্চশিক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তিসহ
উচ্চশিক্ষা (যেমন- এম.এস., এম.ফিল.,
পি-এইচ.ডি., ডি.এস-সি. ইত্যাদি)
গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।

।।চাকরির সুযোগ।।

শিক্ষকতা

•শিক্ষা জীবনে ভালো ফলাফল করলে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকতার সুযোগ ।

•বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের (বিসিএস) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি কলেজগুলোতে কৃষি বিষয়ে শিক্ষকতা করার যায়।

•সরকারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে লেকচারার হয়ে যোগ দেওয়া যায়।

বিসিএস ক্যাডার

•বিসিএসে কৃষিবিদেরা টেকনিক্যাল ও সাধারণ উভয় ক্যাডারে আবেদনের সুযোগ পাওয়ায় দেশের সব কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে পারবেন।

•মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হয়ে ও যোগ দেন। এ ছাড়া সাধারণ কোটায় অনেকেই যোগ দিচ্ছেন।

ব্যাংকার

কৃষি ব্যাংকগুলোতে অগ্রাধিকারসহ দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ব্যাংকে চাকরি করছেন কৃষিবিদেরা।

বিভিন্ন ব্যাংকের ফিশারীজ বিষয়ক ঋণপ্রদানের সেকশনে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। যেমন-
* *.বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
* *.রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক
* *.সোনালী ব্যাংক
* *.অগ্রণী ব্যাংক
* *.রূপালী ব্যাংক
* *.জনতা ব্যাংক
* *.সমবায় ব্যাংক
* *.কর্মসংস্থান ব্যাংক

মৎস্য উদ্যোক্তা

মিষ্টি পানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের স্থান চতুর্থ। মাছ উৎপাদনে মৎস্যজীবীদের এই অভাবনীয় সাফল্যের পেছনে ফিশারিজ গ্র্যাজুয়েটদের গবেষণা ও অক্লান্ত পরিশ্রম। অনেক ফিসারিজ গ্র্যাজুয়েট ব্যক্তিগত খামার ও হ্যাচারি প্রতিষ্ঠা করে মৎস্য উৎপাদন কয়েক গুণ বাড়িয়েছেন।।

রিসার্চ ফেলো বা গবেষণা সহকারী হিসেবে যোগদানসরকারী সংস্থাসমূহ

বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থা/অফিস সমূহে ফিশারীজ গ্রাজুয়েটের কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

যথা-
* মৎস্য অধিদপ্তর,
* মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়
* বাংলাদেশ মৎস্য সম্পদ গবেষণা কেন্দ্র
* বাংলাদেশ মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র

দেশের সরকারি মন্ত্রণালয়ে কাজের সূবর্ন সুযোগ

* পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়
* *.যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়
* *.ভূমি মন্ত্রণালয়
* *.স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়
* *.সেচ, পানি উন্নয়ন ও
* বন্যা মন্ত্রণালয়
* শিক্ষা মন্ত্রণালয়
* বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
* শিল্প মন্ত্রণালয়
* অর্থ মন্ত্রণালয়
* পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
* শিপিং মন্ত্রণালয়

বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান

বাংলাদেশরুরাল
এ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি (ব্রাক)
*.প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র
*.গ্রামীণ ব্যাংক
*.আরডিআরএস
*.বাঁচতে শেখা
*.টিএমএসএস
*.এসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল
এডভান্সমেন্ট

আন্তজার্তিক সংস্থায় কাজের সুযোগ

*.ওয়ার্ল্ড ফিস সেন্টার
*.ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল
ডেভেলপমেন্ট
*.ফাও
*.ইউএনডিপি
*.কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল
বাংলাদেশ
*.কারিতাস বাংলাদেশ
*.নেচার কনজারভেসন মুভমেন্ট
*.এশিয়ান ওয়েটল্যান্ড ব্যুরো
*.ডানিডা
*.সোসাইটি ফর কনসারভেসন অব নেচার
এন্ড এনভায়রনমেন্ট
*.ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর
কনসারভেসন অব নেচার এন্ড
ন্যাচারাল রিসোর্স
*.সাউথ এশিয়া পার্টনারশিপ
বাংলাদেশ

ব্যাক্তিগত পর্যায়ে তৈরী শিল্পে চাকরি

.মৎস্য খামার
*.মৎস্য হ্যাচারি
*.মৎস্য খাদ্য

আত্নকর্মসংস্তান

বর্তমান বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তির কল্যানে অনেক মানুষ চাকরি হারাচ্ছে ও হারাবে। ভবিষৎ যুগ হবে অটোমেশনের। সেক্ষেত্রে ফিসারিজ বিষয়ের পাল্লা অনেক বাড়ি।

নিজে নিজে গড়ে নিতে অনেক কর্মসংস্থান যা নিজেদের চাহিদা মিটবে ও আরো চাকরির সৃষ্ট সম্ভব।যেমন:-

*হ্যাচারি ও রেণু উৎপাদন
*.পোনা ও টেবিল-সাইজ মৎস্য উৎপাদন
*.মুক্তা উৎপাদন
*.কাঁকড়া উৎপাদন
*.বাহারি মাছের রেণু ও
পোনা উৎপাদন
*.মৎস্য খাদ্য উৎপাদন
*.মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ
*.মৎস্য সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম (যেমন-
জাল) উৎপাদন
*.চাষকৃত পুকুর/দিঘীতে মৎস্য
শিকারপ্রতিযোগিতা আয়োজন
*.মৎস্য পর্যটন
*.মৎস্য রোগ প্রবণ এলাকায় মৎস্য
ক্লিনিক স্থাপন
*.অনলাইন মৎস্য তথ্য কেন্দ্র
পরিচালনা

বিদেশে চাকরির কর্মক্ষেত্র

দেশের বাইরে মৎস্য বিষয়ক বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠানে একজন ফিশারীজ
গ্রাজুয়েট যোগ দিতে পারেন।
যেমন-
• *.ইউরোপ
• আমেরিকা
• অস্ট্রেলিয়া
• জাপান
• চিন,
• কোরিয়া
• থাইল্যান্ড
• মালয়েশিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন দেশে।।